Sunday, July 20
Shadow

ঢাকায় জাতীসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস স্থাপনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হবে-ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্মমহাসচিব ও দলের মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান আজ ১৪ জুলাই এক বিবৃতিতে বলেছেন, বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় অফিস খোলার উদ্দেশ্য, কর্মপরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নে সহায়ক উপাদান সম্পর্কে দেশবাসীকে বিস্তারিত অবহিত না করে উপদেষ্টা পরিষদের এই বিষয়ে সম্মতি দেয়া আমাদেরকে বিস্মিত করেছে। বর্তমান বিশ্ব বাস্তবতায় মানবাধিকার পশ্চিমাদের রাজনৈতিক হাতিয়ারে পরিনত হয়েছে। বিশেষ করে জাতীসংঘের মতো একটা প্রতিষ্ঠান যাদের একচোখা নীতি বিশ্বব্যাপী নিন্দনীয়, যাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকারকে ভিন্নমত দমনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের দৃষ্টান্ত রয়েছে তাদের কার্যালয় খোলার অনুমতি প্রদান দেশের জন্য দীর্ঘমেয়াদে বিপদ ডেকে আনবে বলে আমরা মনে করি।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুখপাত্র বলেন, জাতীসংঘের মানবাধিকারের সংজ্ঞা সর্বজনবিদিত না বরং পশ্চিমা দর্শন প্রভাবিত; যা অনেক মাত্রাতেই বাংলাদেশসহ প্রাচ্যের সমাজ-দর্শন ও সংস্কৃতির সাথে সাংঘর্ষিক। জাতীসংঘের মানবাধিকারের সংজ্ঞার মধ্যে সমকামিতার বৈধতা দেয়া, ট্রান্সজেন্ডারকে স্বীকৃতি দেয়া, গর্ভপাতের অধিকার দেয়া, উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষকে একই বর্গে অন্তুর্ভুক্ত করা, যৌনশিক্ষাকে উন্মুক্ত করা এবং মৃত্যদণ্ডকে রহিত করার মতো বিষয় অন্তুর্ভুক্ত। উপর্যুক্ত প্রত্যেকটা বিষয় আমাদের হাজার বছরের বোধ-বিশ্বাস ও সংস্কৃতির সাথে সাংঘর্ষিক। এখন জাতীসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনের কার্যালয় এই বিষয়গুলোকে ভিত্তি করে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি অতি খারাপ বলে প্রতিবেদন করবে। যা বিশ্বে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থান, ভ্রমনকে বাঁধাগ্রস্থ করবে এবং বাংলাদেশে বৈদেশিক পর্যাটনকে নিরুৎসাহিত করবে।

মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, জাতীসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক এই কার্যালয় প্রাথমিকভাবে এখন সমকামিতাসহ উপর্যুক্ত বিষয়ে মানুষের মনোভাব তাদের অনুকূল করার জন্য নানা প্রচারণা চালাবে, ফন্দি-ফিকির করবে। প্রথম কথা হলো, যা আমাদের সমাজের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ না, যাতে আমাদের কোন কল্যাণ নাই এমন বিষয়ে মানুষকে প্রভাবিত করার সুযোগ আমরা কেন দেবো? দ্বিতীয়ত প্রত্যেকটা বিষয় যেহেতু মানুষের হাজার বছরের বোধ-বিশ্বাসের সাথে সম্পৃক্ত তাই সমাজের ভেতর থেকে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আসবে এবং প্রতিরোধ হবে। তখন মানুষের সহজাত প্রতিরোধকে নেতিবাচকভাবে সারা বিশ্বে উপস্থাপন করা হবে। সামগ্রিকভাবে এই কার্যালয় স্থাপনের কোন ইতিবাচক দিক নাই। বরং এর সকল মাত্রাতে দেশের ক্ষতি ও বিপদের সম্ভাবনা পরতে পরতে বিরাজমান। তাই কার্যালয় স্থাপনের এই সিদ্ধান্ত থেকে অবশ্যই সরে আসতে হবে।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্মমহাসচিব বলেন, ফিলিস্তিনে হাজার হাজার শিশু, নারী ও নিরিহ মানুষ হত্যা বন্ধে জাতীসংঘকে বেশি মনোযোগী হওয়া উচিৎ। ফিলিস্তিনিদের ক্ষুধার যাতনায় হত্যার প্রতিবাদে পদক্ষেপ নেয়া উচিৎ। রোহিঙ্গাদের জন্য বেশি উৎসাহী হওয়া উচিৎ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *