
মুসাদ্দিকুল ইসলাম তানভীর , বাকৃবি প্রতিনিধি: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেছেন, ‘মাৎস্য বিশেষজ্ঞরা দেশের মৎস্য খাতে যে বিপ্লব ঘটিয়েছেন, যার ফলে মানুষ স্বল্প খরচ মাছ খেতে পারছে । আশার কথা হলো, ইলিশের মতো দামি মাছও এখন পুকুরে চাষ করা সম্ভব। ইলিশের আচরণগত পরিবর্তন আনার মাধ্যমে পুকুরেও আবাসস্থল জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরিতে গবেষকরা কাজ করে যাচ্ছে।’
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) বেলা ১২ টায় অনুষদীয় সভা কক্ষে একটি সেমিনারের আয়োজন করে বাকৃবির মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের।
এসময় উপাচার্য আরও বলেন, ‘আমরা মাছে ভাতে বাঙালি। মাংস একবেলা থেকে তিন বেলা খেলে ভালো লাগেনা। কিন্তু মাছের ক্ষেত্রে হয়না। এটা জন্মগত ভাবে আমাদের প্রিয় খাবার। এটা খুব মনোমুগ্ধকর আয়োজন ছিল যে জাতীয় দিবসের সাথে সমন্বয় রেখে মৎস্যসম্পদ ব্যবহার ও গুরুত্ব নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে উদযাপন হচ্ছে।’
‘অভয়াশ্রম গড়ে তুলি, দেশি মাছে দেশ ভরি’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে মাৎস্যবিজ্ঞানের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যতে করণীয় সম্পর্কে আয়োজিত ওই সেমিনারে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ জলাশয়ে মাছের জীববৈচিত্র হ্রাসের কারণগুলো আলোচনা করা হয়। পাশাপাশি অভয়াশ্রমের মাধ্যমে কিভাবে অভ্যন্তরীণ জলাশয়ে মাছের উৎপাদন ও জীববৈচিত্র ফিরিয়ে আনা যায় সে বিষয়ে সুপারিশমালা প্রনয়ণ করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. অনুরাধা ভদ্র, ময়মনসিংহ বিভাগের মৎস্য অধিদপ্তরের পরিচালক নৃপেন্দ্র নাথ বিশ্বাস। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক ড. জোয়ার্দ্দার ফারুক আহমেদ।
এর আগে দিবসটি উপলক্ষে সকাল সাড়ে ৯টায় এক বর্ণাঢ্য আনন্দ র্যালী বের করা হয়। এসময় অংশগ্রহণকারীরা হাতে ব্যানার, প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন নিয়ে মৎস্যসম্পদের গুরুত্ব এবং মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের অবদান তুলে ধরেন। র্যালীটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদ থেকে শুরু হয়ে প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে গিয়ে শেষ হয়। এরপর ব্রহ্মপুত্র নদে মাছের পোনা অবমুক্তকরণ কর্মসূচির উদ্বোধন ও কার্প জাতীয় অবমুক্ত করেন বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া।
মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো রফিকুল ইসলাম সরদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া । এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো শহিদুল হক, প্রক্টর অধ্যাপক ড. আবদুল আলীমসহ মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা- কর্মচারিরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মো রফিকুল ইসলাম সরদার বলেন, ‘দিবসটি উদযাপনের উদ্দেশ্য মাছ ও মাৎস্য সম্পদ নিয়ে সকলকে সচেতন করা। দিন যত যাচ্ছে মাছ উৎপাদন কমছে, আমাদের সেদিকে খেয়াল করতে হবে। কি জন্য এই সংকট তৈরি হয়েছে এবং সাথে সাথে পুনরুদ্ধারের উপায় আমলে নিতে হবে।’