Friday, August 15
Shadow

শালিখা সহ বিভিন্ন এলাকায়  বন্যা পরিস্থিতির অবনতি  প্রতিদিন  আক্রান্ত  নতুন নতুন ঘরবাড়ি রাস্তাঘাঠ।

স্বপন বিশ্বাস, শালিখা (মাগুরা) প্রতিনিধিঃ
মাগুরার শালিখা উপজেলা মাগুরা সদর সহ ঝিনাইদহ জেলার কিছু এলাকায়   অবিরাম বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পানিতে  বিস্তীর্ণ ফসলি মাঠ,মাছের ঘের,রাস্তা ঘাঠ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থসেবা কেন্দ্র, বসত বাড়ি পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে । বন্যার পানিতে বিস্তৃত ফসলের মাঠ গুলো যেন সাগরে পরিনত হয়েছে। প্রতিদিন যোগ হচ্ছে ক্ষতির পরিমাণ ।উপজেলার ৯৫ ভাগ  আমন ধান লাগানোর কাজ শেষ হয়েে গিয়েছিল ।

কিছু জমি বাকি থাকলেও বীজতলা তলিয়ে যাওয়ার কারণে আর রোপণ সম্ভব হবে না। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ঝিনাইদহ জেলার কালিগন্জ ও সদর উপজেলার বামোনাইল, শিকারপুর,মুনুড়িয়া দোহাকুলা,শালিখা উপজেলার  ধনেশ্বরগাতি,তালখড়ি,মাগুরা সদর উপজেলার রাঘবদাইড়,মঘী ইউনিয়নের প্রায় ৩০ টি গ্রাম পানিতে ভাসছে। রাস্তার উপর কোথাও কোথাও ২/৩ ফুট পানি উঠে গেছে।   ফসলের আর তেমন কোনো চিহ্ন নেই, চারদিকে শুধুই থইথই পানি।

মনে হচ্ছে যেন বিস্তীর্ণ ফসলি জমি যেন  সাগরে পরিণত হয়েছে।  গ্রাম গুলো যেন দ্বীপ।একই সাথে দেখা যায়, চটকাবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,চতিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,সেওজগাতি আদর্শ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়,  ধনেশ্বরগাতি প্রাথমিক বিদ্যালয়,ধনেশ্বর গাতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চার পাশে পানি থৈথৈ করছে। পানি উঠে গেছে ধনেশ্বর গাতি ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, কমিউনিটি ক্লিনিক।এছাড়া,ধনেশ্বরগাতি,সেওজগাতি,চতিয়া,গোবিন্দ পুর,থৈ পাড়া,টিওরখালী,দীঘল নুরপুর সাংদা গজদূর্বা,ভাটোয়াইল, ঝিনাইদহ জেলার মনুড়িয়া নাটোপাড়া গ্রামের শত শত ঘর বাড়িতে পানি উঠে গেছে।  তালখড়ি গোবিন্দপুর সড়ক, টিওরখালী উজগ্রাম সড়ক ধনেশ্বর গাতি থৈ পাড়া সড়ক,সিংড়া নারিকেল বাড়িয়া,মুনুড়িয়া টিকারী বাজার সড়ক  সহ অনেক সড়ক তলিয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে গেছে।  

এ ব্যাপারে শতখালী ইউনিয়নের শতখালী গ্রামের  কৃষক মকবুল হোসেন জানান, তিনি প্রায় সাড়ে ৭বিঘা জমিতে আমন ধান চাষ করেছিলেন।,যার পুরোটায় শেষ হয়ে গেছে।  ভাটোয়াইল গ্রামের জিল্লুর রহমান বলেন, বন্যার ক্ষতি পোষানোর কোন সুযোগ নাই।বিশেয করে, চলাচলের জন্য রাস্তা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।এক মাসের পরিশ্রমের পর ধান গাছ বড় হয়ে গেলেও এখন সবই পানির নিচে। শুধু ফসলই নয়, ক্ষতি হয়েছে মাছ চাষেও। চুকিনগর গ্রামের উদ্যপ মন্ডল, বলেন, সব তলিয়ে গেছে, আমাদের সরকারি সাহায্য প্রয়োজন ঘুরে দাড়ানোর জন্য।  শালিখা উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে প্রায় ২৭.৯ হেক্টর পুকুর ও মাছের ঘের পানিতে ভেসে গেছে। তালখড়ি গ্রামের কৃষক ইসমাইল হোসেন বলেন, টানা বৃষ্টি এবং বন্যার পানিতে পুকুর, মাছের ঘের এবং ফসিল জমি আমাদের সব শেষ! ’আমাদের এখন আর কোন ফসল নাই। শালিখা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবুল হাসনাত বলেন, উপজেলার প্রায় ২৫০হেক্টর জমিতে আমন ধান,১৬হেক্টর জমিতে সবজি পানিতে তলিয়ে গেছে।

অনেক এলাকায় কৃষকরা বাঁধ নির্মাণ করে কিছু ফসল রক্ষার চেষ্টা করে যাচ্ছে । আমরা নিয়মিত খোঁজখবর রাখছি এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। তবে  সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ধনেশ্বরগাতি ও তালখড়ি ইউনিয়নের অধিকাংশ সচেতন মানুষ মনে করেন, অপরিকল্পিত ব্রীজ নির্মাণ ও নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে জল নিষ্কাশন মুখে ভেড়ি,পুকুর  নির্মাণ এই বন্যার জন্য বেশি দায়ী। কারণ পানি প্রবাহে নানা ভাবে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে কৃষকদের দাবি বারগংগা খালের উজগ্রাম,সেওজগাতিও শ্মশানের নিকট নির্মিত তিনটি ব্রীজ কমপক্ষে চারগুণ বড় করে নির্মাণ করতে হবে। এছাড়া খালের মুখের ভেড়ি বাঁধ অপসারণ করতে হবে। তা না হলে ভবিষ্যতে সমস্যা আরও প্রকট হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *