Thursday, October 2
Shadow

পাইকগাছায় কলমিবুনিয়া সপ্রবি জলমগ্ন: শিক্ষক- শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি 

পূর্ণ চন্দ্র মন্ডল, পাইকগাছা: চারিদিকে পানিতে থৈ থৈ করছে। জলরাশির মধ্যে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে একতলা ভবন। সামনে এগিয়ে যেতেই শিশুদের পাঠের শব্দ। এটি একটি সরকারি প্রাথমিক স্কুল। জলাবদ্ধতার কারণে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগের শেষ নেই। মাঠ নিচু থাকায় শিক্ষার্থীরা মাঠে সমাবেশ, খেলাধুলা করতে পারে না। প্রায় দশ-বারো বছর যাবত মৎস্য  বর্ষা মৌসুম এলেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়। পাশাপাশি চতুর্দিকে মৎস্য লীজঘের এর পানি না কমানোই। বিবিধ কারণে জলাবদ্ধতা নিরসনে কর্তৃপক্ষের কোনো উদ্যোগ নেই বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।বিদ্যালয়টির নাম ৬৫ নং কলমিবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, পাইকগাছা উপজেলার চাঁদখালী ইউনিয়নে ১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত ৬৫ নং কলমিবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৮২ শতক জায়গার ওপর নির্মিত। বর্তমানে বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংখ্যা ৪ জন এবং শিক্ষার্থী সংখ্যা ৫৪ জন। বিদ্যালয়ের পেছনে হাজার হাজার বিঘা চিংড়িঘের রয়েছে। ঘের মালিকরা, ইজারাদাররা বদ্ধ চাঁদখালী নদীতে যত্রতত্র বাঁধ, নেটপাটা দিয়ে বছরের পর বছর মাছ চাষ করায় এ দুর্ভোগের শিকার। শুধু এই বিদ্যালয়টি নয় সমগ্র অঞ্চলটি জলাবদ্ধতায় রয়েছে। এছাড়া পানি নিষ্কাশনের জন্য একটি কালভার্ট থাকলেও চাঁদখালী ও বিষ্ণুপুর ওয়াবদার স্লুইসগেট বন্ধ থাকায় পানি নামতে পারছে না। ফলে বিদ্যালয়ের মাঠ মাসের পর মাস জলমগ্ন থাকে। অন্যান্য বছরের মতো একই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

অতিবর্ষণে গত দেড় মাসে মাঠে হাঁটুপানি, কোথাও তার বেশি জমে আছে। ফলে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা, সমাবেশ ও বিনোদন বন্ধ হয়ে গেছে। সবচেয়ে আশংকায় থাকে অভিভাবকরা। কোমলমতি শিক্ষার্থীরা পানিতে ডুবে কোন অঘটন না ঘটে। এছাড়া বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও কমে গেছে বলে জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষক বিকাশ বরণ সানা। তিনি বলেন, পানি নিষ্কাশনের পাশাপাশি মাঠটি বালু-মাটি দিয়ে ভরাট করে উঁচু করা হলে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি মিলবে। সরকারি স্লুইসগেট খুলে দিলে চাঁদখালী ইউনিয়ন সহ আশপাশের সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাবে বলে জানান। এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইউনুছ মোল্যা বলেন, কিছু মানুষ স্লুইসগেটের মুখ বন্ধ করে রাখায় পানি নামতে পারছে না। এতে অতিবৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। সমস্যার সমাধানে সরকারের জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। এব্যাপারে কেবিএস ক্ল্যাস্টারের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, নিচু অঞ্চল। পাশে লীজ ঘের ও খালে ঠিকমত পানি সরবরাহ না থাকায় 

 জলাবদ্ধতার সৃষ্টি। মাঠ ভরাটের জন্য আগে একবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। আরো পর্যাপ্ত বরাদ্দের জন্য কর্তৃপক্ষ কে অবহিত করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহেরা নাজনীন বলেন, বিদ্যালয়টির যাতায়াতের জন্য এবছর বাজেটে নতুন রাস্তা নির্মাণ করেছে। স্কুল মাঠে এমন অবস্থায় রয়েছে সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষ কোনো কিছু অবহিত করেনি। তবে আবেদন করলে চলতি অর্থবছরে মাঠ ভরাটের ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানান উপজেলা প্রশাসনের এ কর্মকর্তা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *