
একেএম নাজমুল আলম : বেল গাছ ভারত ও বাংলাদেশের আদিবাসী গাছ, যা বিস্তৃতভাবে দক্ষিণ এশিয়া ও সিএসএলও এলাকায় স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠে। শুষ্ক বনাঞ্চল থেকে বনভূমি—প্রায় যেকোনো ধরনের মাটিতে এটি বৃদ্ধি করতে পারে, এমনকি পানির স্তর ওঠানামা সহকারী মাটিতেও বেঁচে থাকতে পারে। তাপমাত্রার মাত্রা −৭ °C থেকে ৫০ °C পর্যন্ত সহ্য করতে পারে ।
পৌরাণিক পূজারহিতি ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব
হিন্দুধর্মে বেল গাছ পবিত্র বলে বিবেচিত। রিগবেদে উল্লেখ আছে যে, মা লক্ষ্মী প্রতিদিন ভগবান শিবকে এক হাজার বেল ফুল নিবেদন করেন। অর্ধেক নিজের শরীর ত্যাগ করে, দুইটি বেল ফল তিনি উপহার দেন—এ থেকেই বেল গাছের ধারণা সৃষ্টি, এবং এ গাছকে ঐশ্বর্য ও সম্পদের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয় ।
অজানা ঔষধি গুণাবলী (বহু বিবর্ণ ক্ষেত্র)
- হজমব্যবস্থার দরিদ্রতা আর উপশম: অপকৃত বেলে থাকা ট্যানিন যৌগ হজমতন্ত্রে কাজে আসে। কোলেরা ও ডায়রিয়ার মতো ইনফেকশন লাঘব করে এবং গ্যাসট্রিক আল্সার কমাতে সাহায্য করে ।
- অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট: প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি, সি, ক্যারোটিন, প্রোটিন ও খনিজ (পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম) সংলগ্ন যা দেহে প্রদাহ কমায় এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ।
- মধুমেহ নিয়ন্ত্রণ ও কোলেস্টেরল হ্রাস: কাঠ ও গাছের শিকড়ে থাকা গাম (Feronia gum) ইনসুলিন নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। নিয়মিত বেল রস পান করলে স্বস্তিদায়ক রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রিত থাকতে পারে ।
- শ্বাসকষ্ট ও অ্যানিমিয়া উপশম: শ্বাসপ্রশ্বাসের রোগে যেমন অ্যাজমা, ঠাণ্ডা, জন্ডিস ইত্যাদিতে পাতার নির্যাস ও গাছের অন্যান্য অংশের ব্যবহার প্রচলিত ।
- হরমোনাল স্বাস্থ্যে উপকার: ধূলো শুকানো পাতাগুলি ঘরের বাতাস পরিশোধনে ব্যবহৃত; প্রচলিত চিকিৎসায় এই গাছ পাতার ইনফিউশন কাজে লাগে ।
কাজন্ত ফল থেকে পানীয়ে: ঐতিহ্য ও ব্যবহার
পাকা বেল ফলের মাংস থেকে তৈরি বেল শরবত—বিশেষ করে গ্রীষ্মে ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয়। এটি শরীর ঠান্ডা রাখে এবং ক্ষুধা ও দুর্বলতা দূর করে ।
বিজ্ঞানে যাচাইয়ের সীমাবদ্ধতা
- যদিও প্রচলিত আয়ুর্বেদি ও সিধা চিকিৎসায় বেলের ঔষধি গুণাবলীর উল্লেখ আছে, আধুনিক বৈজ্ঞানিক সমর্থন সীমিত। WebMD-র মতে, পর্যাপ্ত ক্লিনিক্যাল গবেষণা না থাকায় এগুলি নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত নয় ।
- প্রায় সহনীয় প্রাকৃতিক ধরাজড় ও বিস্তৃত টেকনোলজি বহির্ভূত পরিবেশে অবশ্যই বেল গাছের গুণাবলী উঠে এসেছে।
- ঐতিহ্যবাহী ও পৌরাণিক মূল্যবোধ ধারণ করেছে এই গাছ, যা ধর্ম ও সংস্কৃতিতে গভীরভাবে নাকি প্রতিষ্ঠিত।
- ঔষধি ও স্বাস্থ্য উপকারী উপাদান যেমন ট্যানিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন‑৬, ফাইবার এবং খনিজ উপাদানের উপস্থিতি প্রতিদিন বাড়ছে গুরুত্ব।
- কৃষি ও প্রাকৃতিক চিকিৎসার সংকরায়—বেল গাছ হতে পারে এক গুরুত্বপূর্ণ উপহার: রোগ‑উপশম, হজমব্যবস্থা উন্নয়ন ও গরম মৌসুমে শীতল পানীর উৎস।
- কিন্তু সতর্কতা প্রয়োজন: আধুনিক চিকিৎসার বিকল্প হিসেবে নেওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত; বিশেষ করে উচ্চ রক্তচাপ, যকৃত সমস্যা, গর্ভাবস্থা ইত্যাদি ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
- বেল গাছ সম্পর্কে এই সম্প্রতি পাওয়া তথ্য আমাদের জানাচ্ছে—গাছটি শুধু এক ফলবিহীন নান্দনিক নয়, বরং নিরাময় শক্তিতে ভরপুর। ফুসফুস, হজম, রক্তচাপ, স্কিন ও ইনফেকশন সংক্রান্ত বিকল্প চিকিৎসায় এটি বিনোদিন এক সম্ভাবনা। তবে, ক্লিনিক্যাল প্রিজার্মেন্টেশন ছাড়া এই জৈব চিকিৎসাকে একচেটিয়া গ্রহণে সতর্ক থাকা প্রয়োজন।