
রওজায়ে জাবিদা ঐশী, সিএমজি : দক্ষিণ পশ্চিম চীনের সিচাং স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের রাজধানী লাসা নতুন রূপে জেগে উঠছে। এক হাজার ৩শ’ বছরের পুরনো ঐতিহ্যের এই শহরে লাসা নদীর দু’পাড়ে নির্মিত হয়েছে নতুন ইকো-করিডোর, যার দৈর্ঘ্য ৪.১ কিলোমিটার। এই প্রকল্পটি লাসা শহরের পানি ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশ পুনরুদ্ধার প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপের অংশ। এটি শহরের কেন্দ্রস্থলের সঙ্গে সংযুক্ত করছে সিয়ানচু আইল্যান্ড এবং সুন আইল্যান্ডকে।
প্রকল্পে রয়েছে স্লুইস গেট মজবুতকরণ, ব্রিজ নির্মাণ, নদীপাড়ের পরিবেশ উন্নয়ন এবং স্মার্ট ডিজিটাল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম। পানি চলাচলের পথকে এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যেন এটি শহরের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে আবার নদীতে ফিরে যায়। এমনটিই জানিয়েছেন পানিসম্পদ দফতরের উপপরিচালক চাং চ্যংফিং।
“আমরা চোংকান খালের মাধ্যমে নদীর পানি শহরের ভেতর আনি, তারপর তা পশ্চিম পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে আবার নদীতে ফিরে যায়। এটা শহরের পানিচক্রকে জীবন্ত করে তোলে।”
একসময় এই নদীর পাড় ছিল এবড়োথেবড়ো , ধুলোময়, যা শহরের উন্নয়নে ব্যাঘাত ঘটাত। এখন সেই নদী তীরে তৈরি হয়েছে হাঁটার পথ, পিকনিকের জায়গা আর সবুজ উদ্যানে ভরপুর এক নতুন পরিবেশ।
নদীর পরিবেশগত উন্নয়নের পাশাপাশি এখানে বসানো হয়েছে ওয়াটার-স্ক্রিন ডিসপ্লে, যেখানে রাতে চলবে আলো-ছায়ার খেলা, ফোয়ারা আর থ্রিডি প্রজেকশন — যা বাড়িয়ে দেবে পর্যটনের আকর্ষণ।
এই প্রকল্পে এখন পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে প্রায় ২.৭ বিলিয়ন ইউয়ান বা ৩৭৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর সুফল পাচ্ছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও।
রেস্টুরেন্ট মালিক বলেন,”নদীর দৃশ্য এখন দারুণ। আমার রেস্টুরেন্টের ছাদে বসে অনেকে খেতে আসছেন, প্রতিদিনই বুকিং থাকে। পর্যটন বাড়ছে।”
ইতিহাস আর আধুনিকতার মেলবন্ধনে গড়ে উঠছে ইতিহাসের শহর লাসা, যেখানে নদী শুধু শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাচ্ছে না, বরং শহরের প্রাণ হয়ে উঠছে। যেখানে উন্নয়ন মানে শুধু অবকাঠামো নয়, বরং প্রকৃতি আর সংস্কৃতির সম্মিলিত অগ্রগতি।