
বিদেশ ভ্রমণে গিয়ে স্মৃতি ধরে রাখতে ছবি তোলা আমাদের সবারই প্রিয় কাজ। বিশেষ করে যদি গন্তব্য হয় দুবাইয়ের মতো ঝলমলে শহর, তাহলে পর্যটকদের কাছে ছবি তোলা যেন বাধ্যতামূলক রীতিতে পরিণত হয়। কিন্তু ভ্রমণের আনন্দ যদি আইনি জটিলতায় পরিণত হয়, তাহলে?
হ্যাঁ, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বিশেষ করে দুবাই ও আবুধাবিতে ছবি তোলার নিয়মকানুন ভেঙে ফেললে শাস্তি হিসেবে দিতে হতে পারে এক লাখ ৩৬ হাজার মার্কিন ডলার পর্যন্ত জরিমানা, বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় কোটি টাকা! শুধু জরিমানাই নয়, গুরুতর মনে করলে কর্তৃপক্ষ কারাদণ্ডও দিতে পারে।
‘যেমন দেশে যদাচার’— এই প্রবাদ ভুলে গেলে ঘটে যেতে পারে বড় বিপদ।
দুবাই ও আবুধাবির স্থানীয় কর্তৃপক্ষ স্পষ্টভাবেই জানিয়ে দিয়েছে, ছবি তোলার ক্ষেত্রে পর্যটকদের সতর্ক থাকতে হবে। অনেক সময় সাধারণ মনে হওয়া একটি ছবিও হয়ে যেতে পারে আইনের লঙ্ঘন।
ভ্রমণ-আয়োজক প্রতিষ্ঠান ই-শোরস জানায়, এমনকি কোনো ব্যক্তির অনুমতি ছাড়াই তিনি যদি ফ্রেমে এসে পড়েন, তাহলেও সংশ্লিষ্ট পর্যটক পড়তে পারেন আইনি বিপাকে। কারণ, ব্যক্তিগত গোপনীয়তার লঙ্ঘন হিসেবে সেটি গণ্য হতে পারে।
কোথায় কোথায় ছবি তোলায় নিষেধাজ্ঞা?
দুবাই ও আবুধাবিতে কিছু স্পর্শকাতর জায়গা রয়েছে যেখানে ছবি তোলা সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে নিষিদ্ধ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য:
- বিমানবন্দর
- ধর্মীয় অবকাঠামো (মসজিদ/চার্চ)
- সরকারি কার্যালয়
- সামরিক বা নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট এলাকা
এছাড়া, সামুদ্রিক সৈকত বা সাগরপাড়ে ছবি তোলার সময়ও অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। বিশেষ করে যেন অপরিচিত নারীরা ছবি বা ভিডিওতে অনিচ্ছাকৃতভাবে না আসেন, সে দিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
কেন এত কড়াকড়ি?
সরকারি, সামরিক ও নিরাপত্তা-সংশ্লিষ্ট স্থানগুলো সংবেদনশীল এলাকা হিসেবে বিবেচিত হয়। এমন জায়গায় ছবি তোলা বা ভিডিও করা অনেক সময় গোয়েন্দা নজরে পড়ে। এমনকি কেউ যদি শুধু পাখি বা উড়োজাহাজ দেখার উদ্দেশ্যেও সেখানে অবস্থান করেন, তাও সন্দেহের চোখে দেখা হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ:
পর্যটকদের উচিত ভ্রমণের আগে স্থানীয় আইনের বিষয়ে অবগত হওয়া। ছবি তোলার আগে দেখে নেওয়া জরুরি—স্থানটি অনুমোদিত কি না এবং আশেপাশে কারও গোপনীয়তা ভঙ্গ হচ্ছে কি না। শুধু আনন্দময় স্মৃতি ধরে রাখার জন্য তোলা একটি ছবিই যদি দীর্ঘসময় কারাগারে কাটানোর কারণ হয়, তাহলে আনন্দময় ভ্রমণটি এক মুহূর্তেই পরিণত হতে পারে দুঃস্বপ্নে।