Tuesday, July 1
Shadow

নান্দাইলে পি-ম্যানের বিচার চেয়ে ট্রেন আটকালেন এলাকাবাসী 

 তদন্ত কমিটি গঠনের আশ্বাস রেলওয়ে কর্মকর্তার

নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের নান্দাইলে রেলওয়ের এক কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিচার চেয়ে অভিনব প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিুব্ধ এলাকাবাসী। শনিবার (২৮ জুন) দুপুরে নান্দাইল রোড রেলস্টেশনে লাল নিশান উড়িয়ে রেলওয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) মহি উদ্দিন বিশেষ ট্রেন থামিয়ে দেন তারা। অভিযুক্ত পি-ম্যান (পয়েন্টসম্যান) উসমান গণির বিরুদ্ধে জায়গা দখল, নিয়োগ বাণিজ্য, সরকারি গাছ আত্মসাৎসহ একাধিক অভিযোগ তুলে ধরে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান স্থানীয়রা। ময়মনসিংহগামী রেলওয়ে ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) মহি উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি বিশেষ ট্রেন নান্দাইল রোড স্টেশন অতিক্রম করার সময় এলাকাবাসী লাল কাপড় উড়িয়ে সেটিকে থামার সংকেত দেয়। ট্রেন থামলে ডিআরএম মহি উদ্দিন সহ অন্য কর্মকর্তারা ট্রেন থেকে নেমে আসেন। পরে অভিযোগকারী হাসিম উদ্দিন, বিউটি আক্তার ও স্থানীয় বাসিন্দা ও বিএনপি নেতা এহতেশামুল হক শাহীন সহ বহু মানুষ তাদের ঘিরে ধরেন এবং পি-ম্যান উসমান গণির বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগপত্র হস্তান্তর করেন। বিােভকারীরা জানান, রেলওয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী উসমান গণি তার তিন ভাই ও ভগ্নিপতিকে নিয়ে রেলের সরকারি জায়গা দখল করে পাকা ভবন নির্মাণ করেছেন। এছাড়া, তার বিরুদ্ধে রয়েছে সরকারি গাছ কেটে বিক্রি, চাকরির নামে প্রতারণা ও নিয়োগ বাণিজ্যের গুরুতর অভিযোগ। তারা আরও বলেন, “উসমান গণি একজন ডিগবাজিতে পাকা খেলোয়াড়। বিগত সরকারের আমলে তিনি শ্রমিকলীগের সভাপতি ছিলেন, আর এখন মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে রেলওয়ে শ্রমিক দলের আহ্বায়ক পদ বাগিয়েছেন।” চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হয়েও তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে প্রভাব খাটিয়ে হাজিরা খাতায় স্বার করেন এবং নিয়মিত বেতন-ভাতা তোলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এলাকাবাসীর আশঙ্কা, উসমান গণি এতটাই প্রভাবশালী যে তার বিরুদ্ধে দপ্তরে অভিযোগ দিলেও তা গায়েব হয়ে যায়। ভয়ে কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায় না। একারণেই তারা রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য ট্রেন থামানোর মতো বিকল্প পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন। ডিআরএম মহি উদ্দিন বলেন, “লাল নিশান দেখে আমরা ট্রেন থামিয়েছি। এলাকাবাসীর অভিযোগগুলো শুনেছি এবং অভিযোগের প্রেক্ষিতে দ্রুত তার বিরুদ্ধে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এই আশ্বাস পেয়ে এলাকাবাসী শান্ত হলে ট্রেনটি পুনরায় ময়মনসিংহের উদ্দেশে যাত্রা করে। এদিকে অভিযুক্ত উসমান গণি এলাকাবাসীর এই অভিনব প্রতিবাদ বানচাল করতে, কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে পুলিশ ও নান্দাইল মডেল থানা পুলিশকে অবহিত করেছিলেন। কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে থানার ওসি মো. লিটন মিয়া জানান, এখানে আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতির কোন অবনতি যাতে না ঘটে, সে জন্য তিনি সহ সঙ্গীয় ফোর্সসহ উপস্থিত ছিলেন। এলাকাবাসী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, দ্রুততম সময়ের মধ্যে উসমান গণির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে তারা ভবিষ্যতে আরও কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *