
বর্তমানে দেশে ও বিশ্বজুড়ে আবারও কিছু এলাকায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সময়মতো সতর্কতা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেই এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
নিচে করোনা প্রতিরোধে করণীয় ও বর্জনীয় কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হলো: করনীয় বিষয়সমূহ: অপ্রয়োজনে বাসা থেকে বের হবেন না- যেহেতু অধিকাংশ বাচ্চাদের টিকা দেয়া নেই তাই তারা একটু বেশি ঝুকিপূর্ণ। কাজেই বাচ্চাদের নিয়ে শপিং করা বা বাইরে বেড়ানো আপাদত বন্ধ রাখা জরুরী। ভিড় এড়িয়ে চলুন, বাচ্চা ও বৃদ্ধদেরকেও ভিড় মুক্ত রাখা উচিত। জরুরী কাজ ব্যাতিত বাইরে আনা ঠিক হবে না। বাইরে বের হলেও স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হবে।
মাস্ক ব্যবহার করুন– ভিড়যুক্ত স্থান, হাসপাতাল বা গণপরিবহনে গেলে অবশ্যই ভালো মানের মাস্ক (যেমন N95 বা 3-প্লাই মাস্ক) পরুন।
নিয়মিত হাত ধোয়া– সাবান ও পানি দিয়ে কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড হাত ধুতে হবে। বাইরে থেকে এলে, খাবার খাওয়ার আগে বা পরে।
হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার মেনে চলুন– কাশি বা হাঁচির সময় টিস্যু বা কনুই দিয়ে মুখ ঢাকুন।
টিকা নেওয়া থাকলে বুস্টার ডোজ নেওয়া– যারা এখনও বুস্টার ডোজ নেননি, দ্রুত নিয়ে নিন। নতুন ভ্যারিয়েন্ট অনুযায়ী টিকা নেওয়ার পরামর্শ অনুসরণ করুন।
স্বাস্থ্যঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন– বয়স্ক, গর্ভবতী, ডায়াবেটিস বা অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদী রোগে আক্রান্তদের বিশেষভাবে সুরক্ষা দিন।
সর্দি-জ্বর হলে বিশ্রাম ও চিকিৎসা নিন– লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত আইসোলেশন নিন এবং প্রয়োজনে টেস্ট করুন।
পর্যাপ্ত পানি ও পুষ্টিকর খাবার খান– রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন সি, জিংক, ফলমূল ও শাকসবজি গ্রহণ করুন।
বিশ্বস্ত সূত্র থেকে তথ্য নিন– স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, WHO, IEDCR-এর নির্দেশনা অনুসরণ করুন। গুজবে কান দেবেন না।
যা করা যাবে না:
গুজব ছড়ানো বা বিশ্বাস করা যাবে না– সামাজিক মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য না ছড়ান। যাচাই না করে কিছু শেয়ার করবেন না।
সর্দি-কাশি নিয়ে বাইরে যাওয়া ঠিক নয়– অসুস্থ অবস্থায় অফিস বা স্কুলে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
মাস্ক ছাড়া জনসমাগমে যাওয়া অনুচিত– বিশেষ করে সংক্রমণ প্রবণ এলাকায়।
নিজে টিকা না নিয়ে অন্যকে নিরুৎসাহিত করা যাবে না– টিকাই এখনও সবচেয়ে কার্যকর প্রতিরোধব্যবস্থা।
স্বাস্থ্যবিধি অবহেলা করবেন না– সংক্রমণ কম থাকলেও নিয়ম মেনে চলুন। ভাইরাস কিন্তু পুরোপুরি চলে যায়নি।
কাজেই ভয় নয়, বরং দায়িত্ববান আচরণই পারে এই সংকট মোকাবেলা করতে।
ডা. রিফাত আল মাজিদ ভূইয়া
কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগ,
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল