Monday, June 30
Shadow

বিশ্বের প্রথম অ্যামোনিয়া-চালিত জাহাজের সফল যাত্রা চীনে

বিশ্বের প্রথম খাঁটি অ্যামোনিয়া-চালিত জাহাজ ‘আনহুই’ সফলভাবে প্রথম সমুদ্রযাত্রা শেষ করেছে। চীনের পূর্বাঞ্চলের আনহুই প্রদেশের হ্যফেই শহরে এই যাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। পরিবেশবান্ধব জাহাজ চলাচলের পথে এটি একটি বড় অগ্রগতি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

অ্যামোনিয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ রাসায়নিক পদার্থ। এর শক্তি ধারণক্ষমতা বেশি, এবং এটি জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হলে পানি ও নাইট্রোজেন তৈরি হয়—যা কার্বন ডাই-অক্সাইডের মতো ক্ষতিকর নয়। পরিবেশবান্ধব জ্বালানি হিসেবে ভবিষ্যতের জন্য আশাব্যঞ্জক বস্তু অ্যামোনিয়া।

জাপান, নরওয়ের মতো দেশগুলো ইতোমধ্যেই অ্যামোনিয়া-চালিত জাহাজ তৈরিতে বিনিয়োগ শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থার ২০২১ সালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০৫০ সালের মধ্যে জাহাজ চলাচলের প্রায় ৪৫ শতাংশ জ্বালানি চাহিদা অ্যামোনিয়া দিয়ে পূরণ হতে পারে। তবে এই জ্বালানির প্রক্রিয়াকরণ কঠিন এবং প্রজ্বলন প্রক্রিয়া কিছুটা অনিরাপদ।

‘আনহুই’ জাহাজটি তৈরি করেছে হ্যফেই ন্যাশনাল সায়েন্স সেন্টার-এর ইনস্টিটিউট অব এনার্জি এবং তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠান শেনচেন হাইসু নিউ এনার্জি কোম্পানি।

জাহাজটিতে ২০০ কিলোওয়াটের হাই-স্পিড গ্যাস ইঞ্জিন, দুইটি ১০০ কিলোওয়াটের প্রপালশন মোটর ও ডুয়েল-স্ক্রু চালনা ব্যবস্থা আছে। এটি পূর্ণবহনে ৫০ টন মাল নিতে পারে এবং সর্বোচ্চ গতি ১০ নট।

গবেষক উ তিয়ানউ জানিয়েছেন, অ্যামোনিয়া দিয়ে ইঞ্জিন জ্বালানো, ধীরে ধীরে জ্বলন ধরে রাখা, অ্যামোনিয়া থেকে হাইড্রোজেন উৎপাদন এবং হাইড্রোজেন-অ্যামোনিয়া মিশ্রণে শক্তি উৎপাদনের মতো বেশ কিছু প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ সফলভাবে পার করেছে গবেষণা দল। তারা খাঁটি অ্যামোনিয়া বার্নার ও বিভিন্ন ধরনের অ্যামোনিয়া বিভাজন যন্ত্রও তৈরি করেছেন।

এই প্রথম যাত্রায় জাহাজটি সফলভাবে অ্যামোনিয়া জ্বালিয়েছে, যার ফলে কার্বন ডাই-অক্সাইড প্রায় শূন্যে নেমে এসেছে এবং নাইট্রোজেন অক্সাইড নির্গমনও নিয়ন্ত্রণে ছিল। এর ফলে শুধু জাহাজ নয়, শিল্প কারখানা, ইঞ্জিন ও ফুয়েল সেলেও অ্যামোনিয়া-হাইড্রোজেন জ্বালানি ব্যবহারের নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

চীনের নেভাল আর্কিটেক্টস ও মেরিন ইঞ্জিনিয়ারদের সংগঠনের মহাসচিব ওয়াং চুনলি বলেন, এই সাফল্য পরিবেশবান্ধব জলপথ পরিবহনে নতুন যুগের সূচনা করল। ভবিষ্যতে যদি এই প্রযুক্তি মেগাওয়াট মাত্রায় পৌঁছায়, তাহলে এটি চীনের কার্বন নির্গমন হ্রাসের লক্ষ্য পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

সূত্র: সিএমজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *