Monday, June 30
Shadow

স্ট্রোক করা মাকে হাসপাতালে রেখে ছুটে আসা মেয়েটি পেল না এইচ এস সি পরীক্ষার হলে ঢোকার অনুমতি

এইচএসসি পরীক্ষার্থী এক মেয়ের জীবনে আজকের দিনটি হয়ে উঠেছে এক ভয়াবহ দুঃস্বপ্ন। বাবাহারা মেয়েটির মা সকালে হঠাৎ মেজর স্ট্রোক করেন। ঘরে আর কেউ নেই, তাই মেয়েটিকেই একা হাতে সব সামলাতে হয়েছে। মাকে হাসপাতালে ভর্তি করে যখন সে দৌঁড়ে পৌঁছায় পরীক্ষাকেন্দ্রে— মীরপুর বাংলা কলেজে, তখন তার চোখেমুখে আতঙ্ক আর ক্লান্তির ছাপ। কিন্তু ভাগ্য আজ তার সহায় হয়নি।

কেন্দ্রে ঢুকতে কিছুটা দেরি হওয়ায় মেয়েটিকে পরীক্ষার হলে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। সে কাঁদছিল অঝোরে। শত কান্না, শত আকুতি— কিছুই গলাতে পারেনি হলের গেট। দায়িত্বপ্রাপ্তরা নিয়মের কথা বলেই দায়িত্ব শেষ করলেন। তবে কেউ কি একবারও ভেবে দেখেছেন, কী ভয়ংকর পরিস্থিতি সামলে এই মেয়েটি কেন্দ্রে হাজির হয়েছে?

বোর্ড পরীক্ষার দিন কেউ কি ইচ্ছা করে সাজসজ্জা করতে করতে দেরি করে? কেউ কি চায় নিজের এক বছর নষ্ট করতে? এই মেয়েটি আজ নিজের অসুস্থ মাকে হাসপাতালের বেডে রেখে এসেছিল, শুধুমাত্র একটি পরীক্ষা দেওয়ার আশায়। অথচ একটা ‘নির্দয় নিয়ম’ সেই স্বপ্নটুকু থামিয়ে দিলো।

সিস্টেম বড়, নাকি মানবিকতা? এই প্রশ্নটা জোরে করে উঠছে আজ। আমরা দেখেছি, কত নিয়ম বেঁকে যায় প্রভাবশালী বা ক্ষমতাবানদের জন্য। কিন্তু অসহায়দের ক্ষেত্রে নিয়মগুলো হয় পাথরের মতো কঠিন।

এই মেয়ে কি তার সাহস, দায়িত্ববোধ এবং ত্যাগ দিয়ে পরীক্ষার যোগ্যতা প্রমাণ করেনি? তাকে হলে প্রবেশ করতে দিলে কি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার ভিত্তি নড়ে যেত? আমরা কি আজও বুঝতে শিখিনি, মানবিকতার চেয়ে বড় কোনও নিয়ম নেই?

এই দেশ, এই ব্যবস্থার কাছে প্রশ্ন রেখে যায় মেয়েটির ভেজা চোখ আর নিঃস্ব মন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *