Friday, June 20
Shadow

যুক্তরাজ্যে সাবেক ভূমিমন্ত্রীর সম্পত্তি জব্দ: এটি সবচেয়ে বড় ফ্রিজিং অর্ডার

সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের যুক্তরাজ্যে থাকা সম্পত্তি জব্দ করেছে দেশটির ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ)। বিষয়টি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে এটি এককভাবে সবচেয়ে বড় সম্পদ জব্দের ঘটনা। শুক্রবার (১৩ জুন) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এসব তথ্য তুলে ধরেন।

এর আগে আল জাজিরার ইনভেস্টিগেটিভ ইউনিটকে (আই-ইউনিট) এনসিএর একজন মুখপাত্র নিশ্চিত করেন, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর যুক্তরাজ্যে থাকা সম্পত্তি জব্দ করা হয়েছে।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আইনি অনুরোধ আসার পর এনসিএ এই পদক্ষেপ নেয়। উল্লেখযোগ্যভাবে, সাইফুজ্জামান চৌধুরী ছিলেন শেখ হাসিনা সরকারের ঘনিষ্ঠ মিত্র।

বাংলাদেশে তার বিরুদ্ধে অর্থপাচারের একটি মামলা বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে।

এনসিএ’র এক মুখপাত্র আই-ইউনিটকে দেওয়া বিবৃতিতে জানান, “আমরা নিশ্চিত করছি যে একটি চলমান আইনি তদন্তের অংশ হিসেবে এনসিএ কিছু সম্পত্তির বিরুদ্ধে ফ্রিজিং অর্ডার জারি করেছে।” এই আদেশ অনুযায়ী চৌধুরী তার সম্পত্তিগুলো বিক্রি বা হস্তান্তর করতে পারবেন না।

আল জাজিরার অনুসন্ধানে জানা গেছে, লন্ডনের অভিজাত সেন্ট জনস উড এলাকায় ১ কোটি ১০ লাখ পাউন্ড মূল্যমানের একটি বিলাসবহুল বাড়ি এই ফ্রিজিং আদেশের আওতায় রয়েছে। সেখানেই চৌধুরী আল জাজিরার ছদ্মবেশী সাংবাদিকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং নিজের বৈশ্বিক সম্পদ, ব্যয়বহুল পোশাক ও বিলাসবহুল জীবনযাপন নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা করেন।

সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমি শেখ হাসিনার সন্তানের মতো। উনি জানেন আমি এখানে ব্যবসা করি।” তিনি নিজেকে শেখ হাসিনার “ঘনিষ্ঠ পারিবারিক আত্মীয়” বলেও দাবি করেন।

বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী, একজন নাগরিক বছরে সর্বোচ্চ ১২ হাজার ডলার পর্যন্ত দেশের বাইরে নিতে পারেন। অথচ আল জাজিরার তদন্তে দেখা যায়, সাইফুজ্জামান চৌধুরী লন্ডন, দুবাই ও নিউ ইয়র্কে ৫০ কোটি ডলারেরও বেশি মূল্যের সম্পত্তি কিনেছেন। এসব সম্পত্তির কোনোটিই বাংলাদেশে তার কর বিবরণীতে উল্লেখ করা হয়নি।

প্রসঙ্গত, গত বছরের আগস্টে ছাত্র ও সাধারণ জনগণের গণ-অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। এরপর থেকেই দুর্নীতি ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ লোপাটের অভিযোগে হাসিনা সরকারের ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে দেশের নতুন প্রশাসন।

অভিযোগ রয়েছে, সাইফুজ্জামান চৌধুরী ছিলেন সেই প্রভাবশালী ব্যক্তিদের একজন, যিনি রাজনৈতিক ক্ষমতা ও প্রভাব ব্যবহার করে বিদেশে বিপুল সম্পদ গড়ে তুলেছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *