
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর ভাটারা এলাকায় এক শিক্ষার্থীকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় জনপ্রিয় অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়াকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
রোববার (১৯ মে) রাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে থাইল্যান্ড যাওয়ার সময় ইমিগ্রেশন পুলিশ তাঁকে আটকে দেয়। পরবর্তীতে তাঁকে ভাটারা থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ভাটারা থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম জানান, ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে সোমবার সকালে আদালতে তোলা হবে নুসরাত ফারিয়াকে। রিমান্ড চাওয়া হবে কি না—এই প্রশ্নে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে থানার এক সূত্র বলেছে, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইতোমধ্যেই রিমান্ড আবেদন তৈরির কাজ করছেন।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল সাংবাদিকদের বলেন, “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আন্দোলন দমন ও হত্যাচেষ্টার পেছনে অর্থ জোগান দেওয়ার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। তদন্তের স্বার্থে তাঁকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।”
প্রসঙ্গত, এই ঘটনা নতুন নয়। এর আগেও চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন ও সোহানা সাবাকে। তাঁদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পরদিন ছেড়ে দেওয়া হয়।
নুসরাত ফারিয়ার ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল রেডিও জকি ও টিভি উপস্থাপক হিসেবে। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনায় ‘আশিকী’ দিয়ে বড় পর্দায় আত্মপ্রকাশ করেন। এরপর একে একে ‘হিরো ৪২০’, ‘বস-টু’, ‘ধ্যাততেরিকি’সহ একাধিক হিট সিনেমায় অভিনয় করেন। পাশাপাশি গায়িকা হিসেবেও খ্যাতি কুড়িয়েছেন ‘পটাকা’ ও ‘হাবিবি’র মতো গানে কণ্ঠ দিয়ে।
তবে সবচেয়ে আলোচনায় আসেন শেখ হাসিনার চরিত্রে অভিনয় করে। ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ সিনেমায় শেখ হাসিনার চরিত্রে অভিনয় করেন ফারিয়া, যেটি ছিল প্রয়াত ভারতীয় নির্মাতা শ্যাম বেনেগালের পরিচালনায় একটি বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনা।
এই চরিত্রে কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে নুসরাত বলেছিলেন, “এই চরিত্রে কাজ করাটা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় গর্ব। এমন সুযোগ আর কোনোদিন আসবে কি না, জানি না।”
কিন্তু সেই গর্বিত অভিনয়জীবনের মাঝেই এবার তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হলো এক স্পর্শকাতর মামলায়। এখন দেখার বিষয়, আদালতের রায়ে পরবর্তী পথ কোন দিকে মোড় নেয়।