
বিশ্বের ইলেকট্রনিকস মার্কেটগুলো একটি শেনচেনের হুয়াছিয়াংবেই। এআই গ্যাজেটে মুখর এই মার্কেট। অনুবাদ যন্ত্র, স্মার্ট মাউস, এআই চশমা থেকে শুরু করে খেলনা—সবখানেই এআইয়ের ছোঁয়া। চীনা প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এআই-নির্ভর ইলেকট্রনিক্স এখন শিল্পখাতের নতুন প্রবৃদ্ধির দিগন্ত। আবার চীনের ইস্পাতশিল্পেও নতুন প্রাণসঞ্চার করছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। প্রযুক্তি এই শিল্পের উৎপাদনের গতি বাড়িয়েছে বহুগুণ।

দক্ষিণ চীনের শেনচেন শহরের হুয়াছিয়াংবেই বিশ্বের অন্যতম বড় একটি ইলেকট্রনিক্স মার্কেট। সেখানেই এখন চলছে এআই গ্যাজেটের রমরমা বেচাকেনা। অনুবাদক যন্ত্র, এআই চশমা, স্মার্ট মাউস থেকে শুরু করে এআই খেলনাও বিক্রি হচ্ছে দেদার।
হুয়াছিয়াংবেই বাজারের এক ব্যবসায়ী বললেন, ‘এআই মাউসটি ব্যবহারকারীর কণ্ঠ শুনে প্রেজেন্টেশন বানাতে পারে, ছবি আঁকতে পারে, এমনকি পুরো নিবন্ধ লিখে দিতে পারে। গত বছর বাজারে মাত্র দুই-তিনটি এআই পণ্য ছিল। কিন্তু এ বছর প্রায় সব ডিভাইসেই এআই আছে। এমনকি হেয়ার ড্রায়ারেও এআই ফিচার আসছে।
শুধু নতুন ডিভাইস নয়, প্রচলিত ইলেকট্রনিক্স পণ্যেও যুক্ত হচ্ছে এআইয়ের জনপ্রিয় লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল। এতে পণ্যের কার্যকারিতা যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে চাহিদাও।
আগস্টের শুরুতে বাজারে আসা এআই–চালিত স্মার্ট ওয়্যারলেস ইয়ারফোন হুয়াছিয়াংবেই বাজারে দারুণ সাড়া ফেলেছে। এক দোকানেই প্রতিদিন বিক্রি হচ্ছে শত শত ইউনিট।
ওই ব্যবসায়ী আরও বললেন, ‘গত বছরের তুলনায় এ বছর বিক্রি বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। এর একমাত্র কৃতিত্ব দেওয়া যায় এআই লার্নিং মেশিনকে।’
বাজার এখন জমজমাট হলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ভোক্তা গ্যাজেট শিল্পে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোকে খুব দ্রুত নতুন কিছু নিয়ে আসতে হবে।
শেনচেন হুয়াছিয়াং ইন্ডাস্ট্রিয়াল কোম্পানির সচিব ওয়াং ইয়িং জানালেন, বিদেশি বড় কোম্পানি থেকে শুরু করে দেশীয় শিল্প—সবাই এখন এআই গ্রহণ করছে। আমাদের কোম্পানিও এর বাইরে নয়। সার্ভার ওডিএম, হাই-পারফরম্যান্স কম্পিউটিং, ডেটা সেন্টার পাওয়ার সাপ্লাই, অপটিক্যাল মডিউল—সবখাতেই ক্লায়েন্টদের সঙ্গে সহযোগিতার পরিসর বাড়ছে।
চীনের ইস্পাত শিল্পেও এখন এআই ব্যবহৃত হচ্ছে। সিটিক প্যাসিফিক স্পেশাল স্টিল প্রতিষ্ঠানটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক গবেষণা ও উন্নয়ন ব্যবস্থা ব্যবহার করে নতুন উচ্চমানের বিশেষ ইস্পাত পণ্যের গবেষণা ও উৎপাদনের সময়সীমা ৫৬ শতাংশ কমাতে পেরেছে।
উৎপাদন লাইনে এআই-চালিত ভিজ্যুয়াল ইন্সপেকশন সিস্টেমের কারণে এখন ত্রুটি শনাক্ত করা যাচ্ছে মিলিমিটার স্তরে। আগে যেখানে গুণগত মান যাচাইয়ে ৭২ ঘণ্টা লাগত, এখন তা সম্পন্ন হচ্ছে ৮ ঘণ্টায়।
এ ছাড়া ইস্পাত তৈরিতে ব্যবহৃত ব্লাস্ট ফার্নেসগুলো যখন ‘স্মার্ট’ হবে তখন প্রতি টন ইস্পাত উৎপাদনে সাশ্রয় হবে ৪০ কেজি কয়লা। এতে করে পরিবেশও বাঁচবে দূষণের হাত থেকে।
সূত্র: সিএমজি
