Saturday, November 15
Shadow

পটিয়ায় ইসলামী ব্যাংক থেকে টাকা তোলার হিড়িক

চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায় ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির স্থানীয় শাখায় হঠাৎ করে টাকা উত্তোলনের হিড়িক দেখা দিয়েছে। বুধবার (৮ অক্টোবর) সকাল থেকে ব্যাংকের ভেতরে ও বাইরে উপচে পড়া গ্রাহকের ভিড়ে হিমশিম খাচ্ছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা।

ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, গত চার দিনে (রবিবার থেকে বুধবার) পটিয়া শাখা থেকে প্রায় ৩০ কোটি টাকা উত্তোলন করেছেন গ্রাহকরা। সম্প্রতি চট্টগ্রাম অঞ্চলের বেশ কিছু কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত বা বাধ্যতামূলক অব্যাহতি পাওয়ার পর থেকেই গ্রাহকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

সকালের দিকে ব্যাংক খোলার আগেই শত শত গ্রাহক লেনদেন কাউন্টারের সামনে সারি বেঁধে দাঁড়ান। অনেক নারী ও প্রবীণ গ্রাহককে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে দেখা যায়। ব্যাংকের ভেতরে ভিড় নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করা হয়।

স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. আবদুল কাদের বলেন, হঠাৎ সবাই টাকা তুলতে আসায় ব্যাংকের ভেতরে ভিড় বেড়ে গেছে। চট্টগ্রামের বেশ কিছু কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করায় মানুষ আতঙ্কে পড়েছে।

পাচুরিয়া এলাকার জ্যোৎস্না বেগম বলেন, আমার মেয়ে ইসলামী ব্যাংকে চাকুরিতে যোগ দিয়েছিল। হঠাৎ কোনো কারণ না জানিয়ে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তাই আমি ব্যাংকে রাখা ১০ লাখ টাকার আমানত তুলতে এসেছি।

ইসলামী ব্যাংকের কাচপুর শাখার চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা চৌধুরী তাজবীন জানান, আমাদের অনেকে হঠাৎ করে চাকরি হারিয়েছি। কোনো কারণ জানানো হয়নি। এখন গ্রাহকরা ভেবেছেন ব্যাংক সমস্যায় আছে, তাই টাকা তুলতে আসছেন। আমিও আমার ৫ লাখ টাকা তুলতে এসেছি।

অন্যদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইসলামী ব্যাংকের এক সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, গত চার দিনে প্রায় ৩০ কোটি টাকা উত্তোলন হয়েছে। হঠাৎ কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুতির প্রভাব স্পষ্টভাবে পড়েছে।

ব্যাংক সূত্রে আরও জানা গেছে, চট্টগ্রাম অঞ্চলে সাম্প্রতিক মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশ না নেওয়া, প্রশাসনিক নির্দেশনা অমান্য এবং অনিয়মের অভিযোগে কয়েকজন কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এ ছাড়া কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঋণ অনুমোদন ও নীতিমালা লঙ্ঘনের অভিযোগও তদন্তাধীন রয়েছে।

স্থানীয় সমাজকর্মী শাহজান চৌধুরী বলেন, ইসলামী ব্যাংক বহু বছর ধরে মানুষের আস্থার জায়গা ছিল। এখন হঠাৎ এই বিশৃঙ্খলা গ্রাহকদের মনে ভয় তৈরি করছে।

ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সব শাখায় পর্যাপ্ত অর্থ মজুত রয়েছে এবং গ্রাহকদের টাকা উত্তোলনে কোনো বাধা নেই। পাশাপাশি তারা গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *