Thursday, September 18
Shadow

চীনের প্রতিরোধ-যুদ্ধ ও বিশ্বের ফ্যাসিবাদ-বিরোধী যুদ্ধে বিজয়ের ৮০তম বার্ষিকীর স্মারক অনুষ্ঠানে সি চিন পিংয়ের ভাষণ


সম্মানিত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার প্রধান এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিগণ, সম্মানিত অতিথিবৃন্দ, পরিদর্শনকারী সকল সৈন্যরা, সাথীরা ও বন্ধুরা,

আজ, আমরা চীনা জনগণের জাপানের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধ ও বিশ্বের ফ্যাসিবাদ-বিরোধী যুদ্ধের বিজয়ের ৮০তম বার্ষিকী স্মরণে এক মহাসমারোহে সমবেত হয়েছি। আমরা একসাথে ইতিহাস স্মরণ করছি, শহীদদের স্মরণ করছি, শান্তিকে ভালোবাসছি এবং ভবিষ্যত গড়ার অঙ্গীকার করছি।

আমি চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি, জাতীয় গণকংগ্রেসের স্থায়ী কমিটি, রাষ্ট্রীয় পরিষধ, চীনের গণরাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের জাতীয় কমিটি ও কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশরের পক্ষ থেকে দেশজুড়ে প্রতিরোধ যুদ্ধে অংশ নেওয়া সকল প্রবীণ যোদ্ধা, প্রবীণ সাথী, দেশপ্রেমিক ব্যক্তি ও প্রতিরোধ যুদ্ধের সামরিক নেতাদের প্রতি আমাদের উচ্চতম শ্রদ্ধা জানাচ্ছি! চীনা জনগণের প্রতিরোধ যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা দেশি-বিদেশি সকল চীনাদের প্রতি আমাদের গভীর কৃতজ্ঞতা! চীনা জনগণের আগ্রাসন প্রতিরোধে সহায়তা ও সমর্থনকারী বিদেশি সরকার ও আন্তর্জাতিক বন্ধুদের প্রতি আমাদের আন্তরিক ধন্যবাদ! আজকের এই সমাবেশে অংশ নেওয়া বিভিন্ন দেশের অতিথিদের প্রতি আমাদের আন্তরিক স্বাগত!

সাথীরা ও বন্ধুরা,

চীনা জনগণের প্রতিরোধ যুদ্ধ ছিল একটি কঠিন ও মহান যুদ্ধ। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির প্রস্তাবিত গঠিত জাতীয় ঐক্যমূলক যুদ্ধের পতাকার নিচে চীনা জনগণ দৃঢ় সংকল্প নিয়ে শক্তিশালী শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করেছে, তাদের দেহ দিয়ে একটি প্রাচীর গড়ে তুলেছে এবং আধুনিক সময়ে বহিরাগত শত্রুর আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রথম সম্পূর্ণ বিজয় অর্জন করেছে।

চীনা জনগণের প্রতিরোধ যুদ্ধ ছিল বিশ্বের ফ্যাসিবাদ-বিরোধী যুদ্ধের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। চীনা জনগণ বিশাল জাতীয় ত্যাগের বিনিময়ে মানব সভ্যতা রক্ষা ও বিশ্ব শান্তি বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।

ইতিহাস আমাদের সতর্ক করে যে, মানুষের ভাগ্য ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত, বিভিন্ন দেশ ও জাতির কেবল সমান আচরণ,  শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান, পরস্পরকে সাহায্য করা কেবল অভিন্ন নিরাপত্তা বজায় রাখতে, যুদ্ধের উত্স দূর করতে এবং ইতিহাসের দুর্যোগ পুনরাবৃত্তি এড়াতে পারে!

সাথীরা ও বন্ধুরা,

চীনা জাতি হল একটি মহান জাতি যে অন্যায় ও নিপীড়নের মুখে ভয় পায় না এবং স্বাধীন ও স্বয়ংসম্পূর্ণ। তখন, ন্যায় ও অন্যায়, আলো ও অন্ধকার, অগ্রগতি ও প্রতিক্রিয়ার মধ্যে জীবন-মরণ সংঘাতের মুখে, চীনা জনগণ একচেটিয়ে শত্রুর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে এবং সংগ্রাম করে উঠেছে, তারা দেশের অস্তিত্বের জন্য, জাতীয় পুনরুজ্জীবনের জন্য এবং মানবতার ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই করেছে। আজ, মানবজাতি আবারও শান্তি নাকি যুদ্ধ, সংলাপ নাকি সংঘর্ষ, জয়-জয় নাকি জিয়ো-সাম-এর সিদ্ধান্তের মুখোমুখি হয়েছে। চীনা জনগণ ইতিহাসের সঠিক দিকে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়েছে, মানব সভ্যতার অগ্রগতির পক্ষে দাঁড়িয়েছে, তারা শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের পথে অবিচল রয়েছে এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জনগণের সাথেহাত মিলিয়ে মানবজাতির অভিন্ন ভবিষ্যতের কমিউনিটি গড়ে তুলবে।

চীনা জনগণের মুক্তিবাহিনী সর্বদা দল ও জনগণের সম্পূর্ণভাবে বিশ্বস্ততার যোগ্য একটি বীরত্বপূর্ণ বাহিনী। সামরিক বাহিনীর সকল সদস্যদের তাদের পবিত্র দায়িত্ব বিশ্বস্ততার সাথে পালন করতে হবে, একটি বিশ্ব-স্তরের বাহিনী দ্রুত গড়ে তুলতে হবে, জাতীয় সার্বভৌমত্ব, একীকরণ এবং ভূখন্ডের অখণ্ডতা দৃঢ়ভাবে রক্ষা করতে হবে, চীনা জাতির মহান পুনরুজ্জীবন বাস্তবায়নের জন্য কৌশলগত সহায়তা প্রদান করতে হবে এবং বিশ্ব শান্তি ও উন্নয়নে আরও বিপুল অবদান রাখতে হবে!

ইতিহাস অতীতকে ধারণ করে, এবং ভবিষ্যতের জন্য অনুপ্রেরণা যোগায়। নতুন যুগে নতুন পথে, দেশের সকল জাতির জনগণকে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির দৃঢ় নেতৃত্বে মার্কসবাদ-লেনিনবাদ, মাও সেতুং চিন্তাধারা, তেং সিয়াওপিং তত্ত্ব, “তিনটি প্রতিনিধিত্ব” গুরুত্বপূর্ণ চিন্তাধারা, বৈজ্ঞানিক উন্নয়নের দৃষ্টিভঙ্গি দৃঢ়ভাবে ধরে রাখতে হবে, নয়া যুগে চীনা শৈলীর সমাজতন্ত্রের চিন্তাধারা সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন করতে হবে, চীনা শৈলীর সমাজতন্ত্রের পথে অবিচলভাবে এগিয়ে যেতে হবে, মহান প্রতিরোধ যুদ্ধের চেতনা ধারণ ও বিকাশ করতে হবে, সম্পূর্ণ উদ্যম ও সাহসিকতা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে, চীনা শৈলীর আধুনিকতার মাধ্যমে শক্তিশালী দেশ গঠন ও জাতীয় পুনরুজ্জীবনের মহান লক্ষ্য অর্জনের জন্য একত্রিত হয়ে সংগ্রাম করতে হবে!

চীনা জাতির মহান পুনরুজ্জীবন অপ্রতিরোধ্য! মানবতার শান্তি ও উন্নয়নের মহান কর্তব্য অবশ্যই বিজয়ী হবে!

সূত্র: সিএমজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *