
সাবিত রিজওয়ান
প্রাপকে জানিয়ে দিই,
আমার বাঁচার ইচ্ছে আর নেই। কষ্টে ভরা জীবন দিয়ে কী আর করব? হতাশা আমাকে দিনে দিনে শেষ করছে। সুখের জীবন না পেয়ে আমরা শোকের জীবন পাই। আমাদেরও তো একটা সম্মান আছে, তাই না? ছোট থেকে ভুলভাল বুঝানো হয়েছে—বিধায় হতাশার সাগরে ডুবতে হয়।
“গরীবের ঘরে জন্ম নেওয়া তোমার দোষ না, কিন্তু গরীব হয়ে মরাটা তোমার দোষ”—এ কথাটি পুরোপুরি সত্য নয়। এটা এক ধরনের মনগড়া বুলি। কারণ মানুষের হাতে সব সময় সুযোগ থাকে না। মুর্খ মানুষের হাতে টাকা গেলে তাদের কথাও হয়ে যায় মহান ‘বাণী’। কিন্তু এই কথাটা শিক্ষিতের নাকি মূর্খের—তা আমি জানি না।
জীবনে সুখ আসে ভাগ্য, পরিস্থিতি ও পরিশ্রমের মিলন থেকে। কিন্তু আমাদের ভাগ্যটা খারাপ, আর পরিস্থিতিও আমাদের প্রতিদিন ঠেলে দেয় পেছনে। পরিশ্রম করার শক্তিটুকু থাকলেও সুযোগটা পাই না। আমি শুনেছি, আমাদের পূর্বপুরুষরাও অনেক পরিশ্রম করেছেন, কিন্তু উন্নতি—সেটা কতটুকু? আজও কেন একই কষ্ট, একই অভাব?
আপনাদের প্রতি আমার অভিমান—আপনারা ধ্বংস হয়ে যান, এবং এখন থেকেই। এটা অভিমান নয়, এক ধরনের আর্তনাদও বটে। আমি এখন বিশ্বাস করি, আপনারা কেউ কারো বন্ধু নন। আমরা কেউ কারো বন্ধু হয়ে উঠতে পারলাম না।
আমরা কজনই বা কোরআনের উপর হাত রেখে বলতে পারব—
“আমরা একে অপরের সত্যিকারের বন্ধু।”
বন্ধু শব্দটা আমরা খুব সহজে বলি, কিন্তু সেই বন্ধুত্বের বোঝা কেউই তুলে নেয় না।
চাচা, ফুফু, খালা, মামা—যারাই হোক, রক্তের সম্পর্ক থাকলেই কি অনুভূতির সম্পর্ক থাকে? বন্ধুত্ব বলতে কিছুই থাকল না আজকাল। ভালোবাসা নেই, দায়িত্ব নেই, শুধু স্বার্থ আছে।
আপনি প্রতিদিন ইনকাম করেন কি-না জানি না, তবে মাসে ইনকাম করেন তো!… কিন্তু কখনো কি খোঁজ নিয়েছেন কারা ইনকাম করতে পারে না? আমি তো বলিনি আপনি পরিশ্রম করেন না—আমি বলছি, আপনার ভেতরেও স্বার্থপরতা আছে। আমাদের সবারই আছে।
আপনি প্লেনের পাইলট—মানে এই নয় যে সবাই প্লেন চালাতে পারে। প্রত্যেকের দক্ষতা আলাদা। কারো আঁকায় প্রতিভা, কারো লেখায়, কারো হাতে কারিগরি দক্ষতা। আমাদের উচিত ছিল পাশে থাকা, কাউকে তুলে ধরার চেষ্টা করা। কিন্তু আমরা সবাই নিজেরটা নিয়েই ব্যস্ত।
মানুষকে দান করার চেয়ে গড়ে তোলা—এটাই বড় কাজ। কিন্তু বাস্তবে দেখি—যে মানুষটা নিজের মন-প্রাণ সামলাতে পারে না, সেও কাউকে গড়ে তোলার চেষ্টা করে। এতে ফলাফল হয় শূন্য।
আমরা কি চেষ্টা করি না ইনকাম করার? করি। কিন্তু সুযোগটা পাই মাত্র ২%। বাকিটা কারা পায়, তা আমরা জানি।
আমি আমার লেখায় যেসব শতাংশ উল্লেখ করি—সেগুলো পরিস্থিতি ও আবেগের হিসাব, তাই ভুল হলে ক্ষমাপ্রার্থী। কিন্তু দেশের মানুষের আচরণে আমি ভীষণ হতাশ।
সবাই নিজের লাভ দেখে, অন্যের ক্ষতকে দেখে না।
মানুষ মানুষকে ভুলে যায়—কিন্তু আশা ভাঙলে ব্যথা থেকে যায় বহুদিন।
ইতি,
দুঃখে ভাঙা এক মন
সাবিত রিজওয়ান
