
শপিংমল থেকে রাস্তাঘাট—লাতিন আমেরিকার সবখানেই এখন দেখা যাচ্ছে চীনা ব্র্যান্ড শাওমি, ওপ্পো ও হুয়াওয়েইর ফোন। সাশ্রয়ী দামে সর্বোচ্চ প্রযুক্তিতে নির্মিত চীনের এসব ফোনের প্রতি আনুগত্য দেখাতে দেরি করছেন না লাতিন ক্রেতারাও।
সিঙ্গাপুরভিত্তিক বাজার বিশ্লেষণ প্রতিষ্ঠান ক্যানালিসের তথ্যমতে, এখন লাতিন আমেরিকার স্মার্টফোন বাজারের ৬০ শতাংশেরও বেশি চীনা ব্র্যান্ডগুলোর দখলে। পেরুতে এ হার প্রায় পৌঁছেছে ৭০ শতাংশে।
অনলাইনে ২৫ লাখেরও বেশি ফলোয়ার আছে পেরুর প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ লিওনেল দেলগাদোর। তিনি জানালেন, ‘চীনা নির্মাতারা সাহসী ও উদ্ভাবনী। তারা ঝুঁকি নেন এবং সবসময় নতুন ফিচার যোগ করতে চান। এখন দেখা যাচ্ছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শুধু দামী ফোনেই নয়, মাঝারি দামের ফোনেও সংযুক্ত হচ্ছে— যা ব্যবহারকারীদের জন্য দারুণ এক মূল্য সংযোজন।’
লাতিন আমেরিকায় চীনা ফোন জনপ্রিয় হওয়ার পেছনে ভূমিকা রেখেছে আরও কিছু কারণ। এর মধ্যে অন্যতম হলো দ্রুত চার্জিং, দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি, মসৃণ ইন্টারফেস ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উপযোগী উন্নত ক্যামেরা।
আবার স্থানীয় ভোক্তাদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তেও চীনা ব্র্যান্ডগুলো এগিয়ে। পণ্য স্থানীয়করণ, করার পাশাপাশি রয়েছে ফ্যান কমিউনিটি।
কলম্বিয়ায় গ্রাহকরা কেনার আগে হাতে-কলমে ফোন ব্যবহার করে দেখতে চান, সেখানে চীনা ব্র্যান্ডগুলো ব্যাপকভাবে শোরুমে বিনিয়োগ করেছে।
উচ্চমানের শপিংমলগুলোতে এখন শাওমি, ওপ্পো ও হুয়াওয়ে শুধু পণ্যের প্রদর্শনী নয়—স্মার্ট হোম ইন্টিগ্রেশনসহ ইন্টারঅ্যাকটিভ ব্র্যান্ড জোনও তৈরি করেছে।
চীনা ব্র্যান্ডগুলো ফ্র্যাঞ্চাইজ পার্টনারশিপের মাধ্যমে তাদের বিক্রয় নেটওয়ার্কও দ্রুত বাড়াচ্ছে—যা তাদের আঞ্চলিক বাজারে প্রবেশ আরও সহজ করেছে।
শাওমির কলম্বিয়ার কর্মকর্তা জানালেন, ২০২১ সাল থেকে টানা চার বছর কলম্বিয়ার স্মার্টফোন বাজারে শাওমি শীর্ষস্থানে রয়েছে।
ব্রাজিলের মানাউস ফ্রি ট্রেড জোনে ভিভোর অঙ্গপ্রতিষ্ঠান জোভি গড়ে তুলেছে আধুনিক উৎপাদন কারখানা। সেখানে মাসে প্রায় এক লাখ ইউনিট ফোন তৈরি হচ্ছে। চীনা জোভি ও ব্রাজিলিয়ান ইলেকট্রনিকস কোম্পানি জিবিআর-এর যৌথ উদ্যোগে গড়ে ওঠা এই প্রকল্প শুধু কর্মসংস্থানই বাড়াচ্ছে না, স্থানীয় প্রযুক্তিবিদদেরও দক্ষ করে তুলছে।
সূত্র: সিএমজি
