
সৈয়দ মুজিবুর রহমান দুলাল, লাকসাম.
সারাদেশের ন্যায় কুমিল্লার লাকসামে তিন দফা দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের “কমপ্লিট শাটডাউন” কর্মসূচী পালিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের উদ্যোগে লাকসাম উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) মাধ্যমে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক বরাবর আন্দোলনরত শিক্ষকরা স্মারকলিপি দিয়েছেন। পরে তাঁরা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচী পালন করেন।
আন্দোলনরত শিক্ষকরা স্মারকলিপিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিশ্রুত প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রেস বিজ্ঞপ্তি (১০.১১.২০২৫) দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের আপাতত ১১তম গ্রেড প্রদান, উচ্চতর গ্রেড সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান ও শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির নিশ্চয়তা প্রদানসহ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান।
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ ও বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের ৩ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- ১. সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল ১০ম গ্রেড দাবির প্রেক্ষিতে অর্থ অর্থমন্ত্রণালয়ের প্রেস বিজ্ঞপ্তি (১০.১১.২০২৫) অনুযায়ি আপাতত ১১তম গ্রেডের প্রজ্ঞাপন জারি। ২. ১০ বছর ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির বিষয়ে জটিলতার অবসান। ৩. সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি।
অবস্থান কর্মসূচী চলাকালে ওইসব দাবি তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা সরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সেক্রেটারী মো. বিল্লাল হোসেন ভূঁইয়া, আন্দোলনরত সহকারী শিক্ষক মাসুম বিল্লাহ, জসিম উদ্দিন, একরামুল হক মুন্না, ফারুক আহমেদ, খলিলুর রহমান, কবির আহমদ, আবদুল লতিফ, সালমা জাহান, রনক জাহান, ফারজানা মনির এবং মনির হোসেন প্রমুখ। এ সময় উপজেলার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েক শত সহকারি শিক্ষক আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন।
শিক্ষকরা বলেন, অর্থমন্ত্রণালয়ের প্রেস বিজ্ঞপ্তির প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ৩ দফা দাবি বাস্তবায়নে ২৩ দিন অতিবাহিত হলেও অদ্যাবধি দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি। ফলে “প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ ও বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ” এর ভার্চুয়াল মিটিংয়ের যৌথ সিদ্ধান্ত মোতাবেক, বুধবার হতে সারাদেশের সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে “কমপ্লিট শাটডাউন” কর্মসূচি চলছে।
তাঁরা আরো বলেন, অর্থমন্ত্রণালয়ের কমিটমেন্ট অনুযায়ী আপাতত ১১তম গ্রেডসহ ৩ দফা বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত লাগাতার পরীক্ষা বর্জনসহ বিদ্যালয়ে “কমপ্লিট শাটডাউন” কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
এই ব্যাপারে লাকসাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নার্গিস সুলতানা আন্দোলনরত শিক্ষকদের দেওয়া স্মারকলিপি প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ইউএনও জানান, আমি শিক্ষকদের স্পষ্ট বলে দিয়েছি, আপনারা আপনাদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলন করছেন। স্মারকলিপি দিয়েছেন। আমি গ্রহণ করেছি। কিন্তু কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ওপর কোনোভাবে ভয়ভীতির প্রভাব বা পরীক্ষায় বাধাগ্রস্ত করা যাবে না। অন্যথায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক সদ্য জারিকৃত প্রেস বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সরকারি চাকুরী আইন, আচরণ বিধিমালা এবং ফৌজদারি আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
