
নড়াইল প্রতিনিধি: নুসরাত জাহান রোজা নামের এক শিশুকে হত্যার দায়ে জোবাইদা বেগম(২১) নামের সৎ মাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ,১০হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের বিনাশ্রম দন্ডাদেশ দিয়েছেন নড়াইল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শারমিন নিগার। গতকাল বুধবার দুপুরে এই আদেশ দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি জোবাইদা বেগম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। জোবাইদা বেদম নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের গিলাতলা গ্রামের সজীব কাজীর স্ত্রী। জজ আদালতের অতিরিক্ত পিপি মো.আজিজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়,গিলাতলা গ্রামের আবুল খায়ের কাজীর ছেলে সজীব কাজীর সঙ্গে ২০২০ সালে প্রথম স্ত্রী রূপা খাতুনের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। ওই ঘরে ইয়াসিন(৫)ও রোজা নামে দুইটি সন্তান রয়েছে । বিবাহ বিচ্ছেদের পর সন্তান দুটি দাদার কাছে থাকে ।
পরবর্থীতে সন্তানদের কথা ভেবে সজীব কাজী দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে জোবাইদা বেগমকে বিবাহ করেন। ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি সকালে তার ভাই ইয়াসিন বোন রোজাকে মারধর করয় সে কান্না শুরু করে। তখর জোবাইদা বেগম রোজাকেবাড়ীর একটি কক্ষে নিয়ে রাজার কান্না থামানের চেণ্টা করেন। কান্না না থামনোর কারণে সৎ মা জোবাইদা বেগম ক্ষিপ্ত হয়ে রোজার নাক-মুখ চেপে ধরেন। এক পর্যায়ে রোজা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর শিশুটিকে একটি কম্বল দিয়ে মুড়িয়ে ঘরের বারান্দার কক্ষের খাটে যেখানে তার শ্বশুর রাতে ঘুমাতেন সেখানে রেখে আসে। দাদা বাড়ী ফিরে নুসরাত ওরফে রোজাকে গোসল করানোর জন্য ডাকাডাকি করেন। তাকে কোথাও খুজে না পেয়ে খায়ের কাজী স্ত্রী পান্না বেগমকে বিষয়টি জানায়। পান্না বেগম পূত্রবধূ জোবাইদার কাছে জানতে চান। জোবাইদা তখন শ্বশুড়িকে বলেন,রোজা বারান্দায় ঘুমাচ্ছে। সেখানে গিয়ে রোজাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। পরে পরিবারের সদস্যরা পুলিশে ঞবর দেন।পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ উদ্ধার করে লোহাগড়া থানায় নিয়ে ময়না তদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। একই দিনে সজীব কাজী ও তার স্ত্রী জোবাইদা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুজনকে থানায় নিয়ে যান। মৃত্যু ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা না থাকায় সজীব কাজীকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরের দিন শিশুর দাদা মো.খায়ের বাদী হয়ে লোহাগড়া থানায় জোবাইদা বেগমকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
