Friday, September 19
Shadow

চীনে চিকিৎসায় নতুন দিগন্ত খুলল ব্রেইন-কম্পিউটার ইন্টারফেস

প্রযুক্তির নাম বিসিআই—ব্রেইন কম্পিউটার ইন্টারফেস। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে রোগী শুধু চিন্তা করে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন নানা ধরনের যন্ত্র। আর সেই প্রযুক্তি এবার গবেষণাগার থেকে পৌঁছে গেছে হাসপাতালের ওয়ার্ডে। বেইজিংয়ের থিয়ানথান হাসপাতালে চালু হয়েছে চীনের প্রথম বিসিআই ক্লিনিক্যাল ওয়ার্ড। এতে করে নতুন গতি পেল অত্যাধুনিক এ প্রযুক্তি।

বিসিআই এমন এক প্রযুক্তি, যা মানব মস্তিষ্কের বিদ্যুৎতরঙ্গ শনাক্ত করে সেটাকে ডিজিটাল সংকেতে রূপান্তর করে। আর এতে করে রোগী চিন্তা করেই শরীরের প্যারালাইজড অংশ চালাতে পারেন বা নড়াচড়া করতে পারেন যান্ত্রিক কোনো অঙ্গ।

থিয়ানথান হাসপাতালের প্রধান নিউরোসার্জন চাও চিচং বলেন, ‘প্রথমে রোগীর পেশি শক্তি ছিল তৃতীয় গ্রেডের, যা ‍খুব দুর্বল। কিন্তু বিসিআই প্রশিক্ষণ শুরুর পর এখন সে নির্দিষ্ট পেশিগুলো সচেতনভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে। এটাই বিসিআই-এর বাস্তব ফল।’

মূলত নিউরোসায়েন্স, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং চিকিৎসাবিজ্ঞানকে এক সুতোয় গেঁথেছে বিসিআই প্রযুক্তি। আমাদের প্রতিটি চিন্তাই মাথায় একধরনের বৈদ্যুতিক সংকেত তৈরি করে, যা বিসিআই সিস্টেম শনাক্ত করে এবং সেটাকে ডিভাইস নিয়ন্ত্রণের ভাষায় অনুবাদ করে।

এই প্রযুক্তি এখন শুধু হাত-পা নয়, কথা বলার ক্ষমতা ফেরাতেও কাজ করছে। যদিও এখনও এটি গবেষণা পর্যায়ে রয়েছে।

চাও চিচং আরও বলেন, ‘আমরা চলাফেরা ও কথা বলার ক্ষেত্রে ভালো ফলাফল দেখছি। তবে এখনো এটি গবেষণার পর্যায়ে—চূড়ান্ত প্রয়োগে সময় লাগবে।’

বিসিআই প্রযুক্তি শুধু হাসপাতালেই সীমিত নয়—এর পেছনে কাজ করছে মেডিকেল ডিভাইস নির্মাতারাও। পূর্ব চীনের চিয়াংসু প্রদেশের রিশেনা নামের একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছে এক অভিনব নিউরাল স্টিমুলেটর, যা রোগীর মাথায় বসানোর পর স্মার্টফোন অ্যাপেই ব্রেইনওয়েভ মনিটরিং সম্ভব।

রিশেনা মেডিকেল ডিভাইস কোম্পানির মহাব্যবস্থাপক তুই ইউহুই জানালেন, ‘আমাদের নতুন নিউরাল স্টিমুলেটর এমনভাবে ডিজাইন করা যে, একবার বসানোর পর রোগীকে হাসপাতালে থাকার দরকার নেই। শুধু মোবাইল অ্যাপে ব্রেইনওয়েভ রেকর্ড করে ক্লাউডে আপলোড করলেই হবে—ডাক্তাররা সেখান থেকেই বিশ্লেষণ করে চিকিৎসা ঠিক করে দিতে পারবেন।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বাস্থ্য খাত, প্রযুক্তি শিল্প এবং সরকারি নীতিনির্ধারকদের সমন্বিত প্রচেষ্টায় এই বিসিআই প্রযুক্তিই আগামী দিনে হয়ে উঠবে যাবতীয় চিকিৎসার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

সূত্র: সিএমজি বাংলা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *