Thursday, September 18
Shadow

চীনের বিসিআই প্রযুক্তিতে ধরা পড়বে মস্তিষ্কের টিউমার সীমানা

মস্তিষ্কের গভীরে থাকা টিউমারের সীমানা সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারণে ইমপ্লান্টযোগ্য মাইক্রোইলেক্ট্রোড অ্যারে ব্যবহারের সফল পরীক্ষা সম্পন্ন করেছেন চীনের গবেষকরা। এর মাধ্যমে ইমপ্লান্টযোগ্য ক্লিনিক্যাল ব্রেইন-কম্পিউটার ইন্টারফেস বা বিসিআই প্রযুক্তিতে অর্জিত হলো গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।

গ্লিওমা বা মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়া অন্যান্য টিউমারের মতো মস্তিষ্কের টিউমারগুলোর বৈশিষ্ট্য হলো—উচ্চহারে সংক্রমণ, উচ্চ মৃত্যুঝুঁকি এবং বারবার ফিরে আসা। এ ধরনের টিউমার দ্রুত বাড়ে। ফলে টিউমার টিস্যু ও স্বাভাবিক মস্তিষ্ক টিস্যুর সীমারেখা অস্পষ্ট হয়ে যায়। অস্ত্রোপচার, রেডিওথেরাপি কিংবা চিকিৎসার ফলাফল মূল্যায়নে সঠিকভাবে এ সীমানা নির্ধারণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

হারবিন মেডিকেল ইউনিভার্সিটির নিউরোসার্জারি বিভাগের পরিচালক শি হুয়াইচাং জানালেন, প্রচলিত পরীক্ষায় টিউমারের আনুমানিক অবস্থান জানা যায়। তবে সার্জারির সময় কোনো পরিবর্তন হলে তা তাৎক্ষণিকভাবে বোঝা যায় না।  

এই সমস্যার সমাধানে চাইনিজ একাডেমি অব সায়েন্সেসের অ্যারোস্পেস ইনফরমেশন রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এআইআর) হারবিন হাসপাতালের সঙ্গে যৌথভাবে ক্লিনিক্যাল বিসিআই মাইক্রোইলেক্ট্রোড ও নিউরাল সিগন্যাল সিঙ্ক্রোনাইজেশন ডিটেক্টর ব্যবহার করে সফলভাবে একটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সম্পন্ন করেছে।

ট্রায়ালে ব্যবহৃত ক্লিনিক্যাল মাইক্রোইলেক্ট্রোডগুলো মাইক্রো-ইলেক্ট্রোমেকানিক্যাল সিস্টেম ও ন্যানো-ফাংশনাল ম্যাটেরিয়াল প্রযুক্তিতে তৈরি। নতুন প্রজন্মের এই নিউরাল প্রোব নমনীয়তা ও বায়োসেফটি নিশ্চিত করে, যা রিয়েল-টাইম সিগন্যাল শনাক্তকরণের মাধ্যমে টিউমারের সীমানা চিহ্নিত করতে পারে।

পাশাপাশি নিউরাল সিগন্যাল ডিটেক্টরটি সংকেত ডিকোডার হিসেবেও কাজ করে। এটি ইলেক্ট্রোড থেকে সংগৃহীত বিপুল স্নায়বিক সংকেত বিশ্লেষণ করে টিউমারের অবস্থান নির্ধারণ করে।

অ্যারোস্পেস-এর সহযোগী গবেষক ওয়াং মিসিয়া জানান, ‘প্রচলিত নিউরাল ইলেক্ট্রোড কেবল কর্টিকাল টিউমার শনাক্ত করতে পারে। আমাদের ইলেক্ট্রোডটি কর্টেক্স, মস্তিষ্কের পৃষ্ঠ, এমনকি গভীরের স্নায়বিক সংকেতও শনাক্ত করতে পারে। এমনকি এটি নিউরোট্রান্সমিটার-সংক্রান্ত রাসায়নিক সংকেতও ধরতে করতে পারে।‘

হুয়াইচাং জানালেন, ট্রায়ালটি একজন গ্লিওমা রোগীর ওপর পরিচালিত হয়েছে। ইমেজিং ডেটার সঙ্গে একক কোষ-স্তরের রিয়েল-টাইম নিউরাল সিগন্যাল ফিডব্যাক একত্র করে টিউমারের সীমানা সফলভাবে ও সঠিকভাবে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, অস্ত্রোপচারের পর রোগীর কোনো খিঁচুনি দেখা দেয়নি, স্নায়বিক ক্ষতি হয়নি, ভাষা স্পষ্ট ও সাবলীল হয়েছে এবং জীবনমান উন্নত হয়েছে।

সূত্র: সিএমজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *