Sunday, November 16
Shadow

গৌরীপুরে বিএনপির মহিলা সমাবেশে হামলা ও ছাত্রদলের ১৯ নেতাকর্মীকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিবেদনঃ

গৌরীপুর উপজেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে শনিবার ১৫ নভেম্বর,দুপুরে বিএনপির মহিলা সমাবেশে হামলা এবং কারণ দর্শানো ছাড়াই ছাত্রদলের ১৯ নেতাকর্মীকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের গৌরীপুর উপজেলা, পৌর, কলেজ ও ইউনিয়ন শাখার নেতৃবৃন্দ। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক কামরুল হাসান পিয়াস।

সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, ৯ নভেম্বর উপজেলা ও পৌর বিএনপির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত মহিলা সমাবেশ ছিল একটি শান্তিপূর্ণ ও ঐতিহাসিক আয়োজন, যেখানে তিন হাজারেরও বেশি নারী অংশ নেন। সমাবেশ শুরুর প্রায় এক ঘণ্টা পর ইঞ্জিনিয়ার এম ইকবাল হোসেনের সমর্থিত একটি মিছিল থেকে স্থানীয় ও বহিরাগত কয়েকজন দুষ্কৃতকারী দেশীয়–বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে অতর্কিতে হামলা চালায়।

হামলায় মা–শিশুসহ পঞ্চাশের বেশি নারী আহত হন, মঞ্চ–চেয়ার–মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। কয়েকটি মোটরসাইকেল চুরিও হয়েছে বলে দাবি করা হয়। বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়েও ভাঙচুর চালিয়ে জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি নষ্ট করা হয়। ঘটনাটির বেশ কিছু অংশ বিভিন্ন গণমাধ্যমে লাইভ প্রচারিত হয়।

নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, হামলার পর একটি স্বাভাবিক মৃত্যুকে হত্যা হিসেবে প্রচার করে অরাজক পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করে একটি পক্ষ। তারা দাবি করেন, উত্তর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নুরুজ্জামান সোহেলের সহোদর ভাই মৃত ব্যক্তিকে নিজের ভাই দাবি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালান, যা পুরো জেলায় উত্তেজনা ছড়িয়ে দেয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ঘটনার পরদিন ১০ নভেম্বর উত্তর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নুরুজ্জামান সোহেল ও সাধারণ সম্পাদক এ কে এম সুজাউদ্দিনের সিদ্ধান্তে ছাত্রদলের ১৯ নেতাকর্মীকে কোনো কারণ দর্শানো ছাড়াই স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়। এ সিদ্ধান্তকে “অন্যায়, একতরফা ও অসাংগঠনিক” উল্লেখ করে নেতৃবৃন্দ বলেন—

“মহিলা সমাবেশে আমাদের ৪/৫ জন স্বেচ্ছাসেবী ছাড়া কেউ উপস্থিত ছিলেন না। অথচ ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, উত্তর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নিজেই সন্ত্রাসীদের নিয়ে হামলার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।”

লিখিত বক্তব্যে তারা দাবি করেন— বহিষ্কারাদেশ আর্থিক লেনদেন ও ব্যক্তিগত বিরোধের ফল। তারা অভিযোগ করেন, জেলা ছাত্রদল সভাপতি নুরুজ্জামান সোহেল তার নিজের ভূমিকা আড়াল করতেই সাধারণ নেতাকর্মীদের তড়িঘড়ি করে বহিষ্কার করেছেন।

প্রতিবাদ জানিয়ে তারা তিনটি দাবি উত্থাপন করেন—১. বহিষ্কারাদেশ বাতিল করে ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত। ২. মহিলা সমাবেশে হামলায় জড়িতদের চিহ্নিত করে সাংগঠনিক ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ। ৩. জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নুরুজ্জামান সোহেলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। শেষে নেতৃবৃন্দ বলেন,“তদন্তে আমাদের কেউ দাঙ্গা–হামলার সঙ্গে জড়িত প্রমাণিত হলে আমরা যেকোনো শাস্তি মাথা পেতে নেব। কিন্তু অন্যায়ের বহিষ্কার মানি না, মেনে নেব না।” সংবাদ সম্মেলনে রিপন মিয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক—সহ বহিষ্কৃত নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

মোঃ হুমায়ুন কবির

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *