
চীনের নানশা দ্বীপপুঞ্জের ইয়ংশু রিফ উপকূলে তিন দশক পর বিরল সামুদ্রিক প্রাণী জলধেনু বা সাগর গাভী (ডুগং) দেখা গেছে। চীনা বিজ্ঞানীরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এই আবিষ্কারকে ওই অঞ্চলের সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের অগ্রগতির বড় প্রমাণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। খবর সিএমজির
গত ৮ জুলাই ইয়ংশু রিফের পরিবেশ সুরক্ষা বিভাগের টহল কর্মীরা প্রথম প্রাণীটিকে শ্বাস নিতে পানির উপরে উঠতে দেখেন। এরপর এক মাস ধরে এর কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করা হয়। গত ২ ও ৩ আগস্ট কাছ থেকে দু’বার দেখা মেলে এবং ভিডিও সংগ্রহ করা হয়।
চায়না একাডেমি অব সায়েন্সেসের সাউথ চায়না সি ইনস্টিটিউট অব ওশেনোলজির গবেষক ছিন কেং ও লি সোংহাই প্রমাণ যাচাই করে নিশ্চিত করেন যে এটি একটি ডুগং তথা জলধেনু। ১১ আগস্ট গবেষক দল সরাসরি প্রাণীটির কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করলে বিষয়টি চূড়ান্তভাবে প্রমাণিত হয়।
জলধেনুর ওজন প্রায় ৫০০ কেজি এবং দৈর্ঘ্য তিন মিটার পর্যন্ত হতে পারে। সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীটিকে চীনা লোককথায় ‘মৎসকন্যার আদিরূপ’ বলা হয়। এটি সাগরের তলদেশে জন্মানো ঘাস খায়।
জলধেনুর জন্মহার কম এবং মানবসৃষ্ট নানা হুমকির কারণে প্রাণীটি বিপন্ন তালিকাভুক্ত। চীনে এটি প্রথম স্তরের সুরক্ষিত প্রাণী। ২০২২ সালে এটিকে কার্যত বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। সর্বশেষ ২০০৮ সালে হাইনান প্রদেশের তোংফাং এলাকায় একটি মৃত জলধেনু পাওয়া গিয়েছিল।
গবেষক কেং বলেন, ‘এই আবিষ্কার প্রজাতিটির আন্তঃমহাসাগরীয় অভিবাসন ধারা বোঝার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সূত্র দিচ্ছে।’ তিনি বলেন, সাধারণত জলধেনুরা দল বেঁধে বিচরণ করে। তাই আরও প্রমাণ সংগ্রহ প্রয়োজন।
গবেষক সোং জানান, এ বছর ইয়ংশু রিফের কাছাকাছি এলাকায় সবুজ কচ্ছপ ও হকসবিল কচ্ছপের মতো প্রথম স্তরের সুরক্ষিত প্রজাতিও পাওয়া গেছে। তার মতে, সাগরগাভী বা জলধেনুর উপস্থিতি সাগরের ঘাসভিত্তিক বাস্তুতন্ত্রের সুস্থতার প্রমাণ এবং ধারাবাহিকভাবে তিনটি বিরল প্রজাতির আবিষ্কার ইয়ংশু রিফের অনন্য পরিবেশগত গুরুত্বকেও স্পষ্ট করছে।