Wednesday, March 12

নাচ–গানে নুসরাত ফারিয়ার জুয়ার প্রচারণা!

বেশ কিছুদিন ধরে নতুন কোনো চলচ্চিত্রে কাজের খবর নেই ঢালিউডের তারকা নুসরাত ফারিয়ার। তবে আলোচনা থেকে দূরে নেই তিনি। এবার আলোচনার কেন্দ্রে এসেছে একটি জুয়ার অ্যাপের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে তার সম্পৃক্ততা। সম্প্রতি ওই অ্যাপের একটি গানে অংশ নিয়ে গানের মাধ্যমে জুয়ার প্রচারণা করেছেন নুসরাত ফারিয়া।

‘সবাই মিলে খেলব, আনন্দ করে ফিরব, সাবধানে খেলে যাব…’ শিরোনামের গানে জাঁকজমকপূর্ণ পরিবেশনায় দেখা গেছে তাকে। গানটির শেষে নুসরাত বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে পথচলায় আমি ভীষণ রোমাঞ্চিত।’ ইউটিউবে প্রকাশিত এই গানের ভিডিওর বর্ণনায় বলা হয়েছে, ‘নুসরাত ফারিয়ার অফিসিয়াল গানের ভিডিও। এটি বাংলাদেশের নিরাপদ প্ল্যাটফর্ম…।’

তবে নুসরাত ফারিয়ার এই প্রচারণা নিয়ে জানতে প্রথম আলো একাধিকবার তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে। গত সোমবার তাকে ফোন কল ও খুদে বার্তা পাঠানো হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। আজ বুধবার পর্যন্ত তিনি এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি।

এর আগে ঢাকাই চলচ্চিত্রের আরেক আলোচিত অভিনেত্রী পরীমনি একই প্রতিষ্ঠানের পণ্যদূত হিসেবে কাজ করেন। এমনকি প্রতিষ্ঠানটির একটি বিজ্ঞাপনচিত্রেও তাকে দেখা গেছে।

বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী, যেকোনো ধরনের জুয়া ও বাজি ধরা নিষিদ্ধ। এমনকি জুয়ার প্রচারণাও বেআইনি। তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্লেষকদের মতে, সাধারণ মানুষের বিশ্বাস অর্জনে তারকাদের ব্যবহার করে এসব প্রতিষ্ঠান। ফলে তারকাদের প্রচারণায় প্রভাবিত হয়ে মানুষ সহজেই জুয়ার ফাঁদে পা দেয়। অধ্যাপক বি এম মইনুল হোসেন এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘জুয়ার প্রতিষ্ঠানগুলো অবৈধ উপার্জিত অর্থের একটি অংশ বিজ্ঞাপনে ব্যয় করে। অথচ তারকারা বিষয়টি নৈতিকভাবে বিবেচনা করছেন না।’

প্রথম আলোয় প্রকাশিত তথ্য যাচাই বিষয়ক ডিসমিসল্যাবের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ফেসবুকসহ মেটার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে বাংলাদেশিদের লক্ষ্য করে বছরে প্রায় ১৫ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে জুয়ার বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। তবে প্রকৃত ব্যয় এর চেয়েও বেশি হতে পারে বলে ধারণা। অনলাইন জুয়ার বিস্তার নিয়ে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা টিআইবি-সহ বিভিন্ন সংগঠন উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। টিআইবির মতে, অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার হচ্ছে।

২০২২ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের তারকা সাকিব আল হাসান বেটিং-সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইট ‘বেট উইনার নিউজ’-এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। দেশের আইনে জুয়া নিষিদ্ধ হওয়ায় বিসিবির চাপের মুখে সাকিব চুক্তি বাতিল করতে বাধ্য হন।

সংবিধানের ১৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বাংলাদেশে জুয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তারকাদের এই ধরনের কার্যক্রম আইনের সাথে সাংঘর্ষিক এবং সমাজের জন্য ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *