
নওগাঁ প্রতিনিধিঃ দীর্ঘ ২২ বছর পর নওগাঁর পোরশায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ট্রিপল মার্ডারের মামলায় তিন আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় আরও ৮ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা এবং চার আসামিকে খালাস প্রদান করা হয়েছে। আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মো. ফেরদৌস ওয়াহিদ এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন: পোরশা উপজেলার কালাইবাড়ি গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে আবু বক্কর সিদ্দিক (পলাতক), হাসেন আলীর ছেলে কাদির (ওরফে কাদের) এবং সাজেমান আলীর ছেলে আমির আলী (ওরফে আমির)। আপরদিকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেনঃ দুরুল হুদা (পলাতক), মো. সেমাজুল ইসলাম, তরিকুল ইসলাম, মো. আবুল কাশেম, মো. রেজাউল করিম, মো. ওয়াজেদ আলী, আবুল কালাম এবং মো. আলিম (ওরফে আলম)। তাদের প্রত্যেককে ৫ বছর সশ্রম কারাদণ্ড, একই সঙ্গে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও মামলা থেকে খালাস পেয়েছেনঃ রফিকুল ইসলাম, মোছা. কহিনুর বেগম, মোছা. মরিয়ম বিবি এবং মোছা. কমেলা বেগম।
আদালত ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০০৩ সালের ৩০ আগস্ট সকালে নওগাঁর পোরশা উপজেলার কালাইবাড়ি গ্রামে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। এতে শফিকুল, মিজানুর, সেরিনা, বইফুল ও নার্গিস সুলতানা নামে চারজন গুরুতর রক্তাক্ত জখম হন। তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এর মধ্যে শফিকুল, সেরিনা, নার্গিস সুলতানার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনজন মারা যান।
এ ঘটনায় আব্দুস সামাদ ওই দিনই পোরশা থানায় বাদী হয়ে ২৬ জনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ ২২ বছর ধরে এ মামলায় ২০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আজ বুধবার এই রায় ঘোষণা করেন বিচারক।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অতিরিক্ত কোঁসুলি সাব্বির আহম্মেদ। তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং আসামিপক্ষের আইনজীবী নাজমুন নাহার জানিয়েছেন, উচ্চ আদালতে রায়ের পক্ষে আপিল করবেন।