
মঙ্গল গ্রহে অভিযানের জন্য বড় ধরনের অগ্রগতি অর্জন করলেন চীনা ভূতত্ত্ববিদরা। সম্প্রতি তারা তৈরি করেছেন মঙ্গল গ্রহের মাটির প্রতিরূপ, যা প্রায় হুবহু মঙ্গলের উত্তরের ইউটোপিয়া প্ল্যানিশিয়া অঞ্চলের মাটিরবৈশিষ্ট্য সম্পন্ন।
নতুন উদ্ভাবিত এই মাটির প্রতিরূপের নাম ইউপিআরএস-১। এটি চীনের মঙ্গলযান চুরোং এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভাইকিং-২ ল্যান্ডারের পাওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি। দুটো যানই ইউটোপিয়া প্ল্যানিশিয়ায় অবতরণ করেছিল।
বিজ্ঞান সাময়িকী ইকারুসে প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়েছে, এই অঞ্চলের ভূতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য অনুসারে, ইউপিআরএস ১-এর সঙ্গে প্রকৃত মঙ্গলের মাটির গড় সাদৃশ্য ৮৬.১ শতাংশ। এই অঞ্চলে একসময় পানির অস্তিত্ব ছিল বলে ধারণা করা হয়, কেননা এখানে জিপসাম ও কাদামাটি জাতীয় জলীয় খনিজ পাওয়া গেছে।
এই গবেষণা পরিচালনা করে চায়না সায়েন্স একাডেমির ইন্সটিটিউট অব জিওলজি অ্যান্ড জিওফিজিক্স। বিজ্ঞানীরা পূর্ব চীনের শানতোং প্রদেশের ব্যাসল্ট পাথর গুঁড়ো করে সেটিকে নির্দিষ্ট অনুপাতে বিভিন্ন খনিজের সঙ্গে মিশিয়ে এই মাটি তৈরি করেন। এরপর একাধিক ধাপে মিশ্রণের রঙ, রাসায়নিক গঠন, কণার আকার ও সহনশীলতা পরীক্ষা করে সফলতা নিশ্চিত করা হয়।নাসার ইনসাইট মিশন যে ড্রিলিং সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিল, এই মাটি তৈরিতে সেই অভিজ্ঞতা থেকেও নেওয়া হয়েছিল তথ্য।
এই মাটি এখন চন্দ্র ও মঙ্গল অভিযানের যন্ত্রপাতি এবং ভূমিতে নামার যানের নকশা তৈরির পরীক্ষায় ব্যবহৃত হবে।
২০২৮ সালে মঙ্গল থেকে নমুনা আনার লক্ষ্য নিয়ে ‘থিয়ানওয়েন-৩’ মিশনের প্রস্তুতি নিচ্ছে চীন। নতুন এই মাটি সেই মিশনের পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে বেশ গুরুত্বপূর্ণ হবে বলে জানিয়েছেন গবেষণা দলের প্রধান তিয়াও ইয়িমিং।
এছাড়া, এই মাটি জীববিদ্যা, খনিজ থেকে পানি উত্তোলন, নতুন প্রযুক্তি পরীক্ষাসহ বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণার দরজা খুলে দেবেও বলে মত দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
তারা আরও বলেছেন, এই পদ্ধতি ব্যবহার করে মঙ্গলের অন্যান্য অঞ্চলের জন্যও একই ধরনের সাদৃশ্যপূর্ণ মাটির প্রতিরূপ তৈরি করা সম্ভব হবে।
সূত্র: সিএমজি