
যুক্তরাজ্য সফররত বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস আজ বৃহস্পতিবার লন্ডনে ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেছেন। বৈঠকে বাংলাদেশের চলমান সংস্কার কার্যক্রমসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের জানান, “আজ সকাল ১১টা ২০ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা ও ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের মধ্যে একান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যা ছিল পুরোপুরি ব্যক্তিগত।”
বৈঠকে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তর প্রক্রিয়া এবং সরকার গৃহীত সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। প্রেস সচিব বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা তার সরকারের নেওয়া সংস্কারমূলক পদক্ষেপ সম্পর্কে রাজা চার্লসকে অবহিত করেন এবং দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে খোলামেলা মতবিনিময় করেন।”
তিনি আরও জানান, প্রায় ৩০ মিনিটব্যাপী এ বৈঠকটি ছিল অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ ও আন্তরিক। দীর্ঘদিন ধরে রাজা চার্লস প্রফেসর ইউনূসকে ব্যক্তিগতভাবে চিনে আসছেন বলে, এই আলোচনায় নানা দিক উঠে এসেছে বলে জানান প্রেস সচিব।
শফিকুল আলম আরও বলেন, “আমি মনে করি, এই সফরের পুরো কার্যক্রমের মধ্যে এটি ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।”
বৈঠক শেষে রাজা ও রাণীর সাক্ষরযুক্ত একটি ছবি উপহার হিসেবে প্রফেসর ইউনূসকে প্রদান করা হয়, যা প্রধান উপদেষ্টার জন্য একটি বিশেষ সম্মান হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।
বাকিংহাম প্যালেসে রাজা চার্লস ব্যক্তিগতভাবে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ইউনূসকে স্বাগত জানান এবং তার সঙ্গে একান্ত এই সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
প্রথানুযায়ী, রাজা চার্লস শুধুমাত্র বিশেষ কৃতিত্বপ্রাপ্ত ও সম্মানজনক ব্যক্তি—বিশেষ করে যারা রাজকীয় নিয়োগপ্রাপ্ত কিংবা রাজকীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত—তাদের সঙ্গে এ ধরনের ব্যক্তিগত সাক্ষাৎ বা ‘অডিয়েন্স’ প্রদান করেন। এটি কেবল প্রথাগত কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক সাক্ষাতের বাইরেও এক ধরনের ব্যক্তিগত স্বীকৃতি ও সম্মান।
রাজা যখন কাউকে ‘অডিয়েন্স’ প্রদান করেন, তা শুধু সাক্ষাতের সুযোগই নয়, বরং ঐ ব্যক্তির কাজ ও অবদান সম্পর্কে জানার আগ্রহ এবং রাজকীয় অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে ওঠে।
এই সম্মানজনক সাক্ষাত বাংলাদেশের জন্য যেমন মর্যাদার, তেমনি বিশ্বপরিসরে প্রফেসর ইউনূসের ভাবমূর্তি এবং চলমান সংস্কার প্রচেষ্টাকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেওয়ার একটি বড় উদাহরণ হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে।