
জেমস আব্দুর রহিম রানা, যশোর : যশোরের ঝিকরগাছায় বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে সংঘর্ষে একজনের হাতের কব্জি কেটে গেছে। মাথা ও ঘাড়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়েছে। আহত আরাফাত লাল্টুর বাবা ও ফুফাতো ভাইও জখম হয়েছেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় লাল্টুকে ঢাকায় রেফার করা হয়েছে। সোমবার (২১জুলাই) রাত ৮টার পর উপজেলার চান্দেরপোল মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবিরা সুলতানা মুন্নীর অনুসারী গোন্নানগর গ্রামের আরাফাত লাল্টু ও রুবেলদের সঙ্গে বিরোধ চলছিল সাবেক আহ্বায়ক মোর্তজা এলাহী টিপুর অনুসারী মিজান, সোহাগ ডাক্তার, রশিদদের।
সোমবার রাত ৮টার পর মিজান গং রুবেলকে ধরে নিয়ে আসে। খবর পেয়ে বিষয়টি জানতে ঘটনাস্থলে যান লাল্টু। তার সঙ্গে ছিলেন বাবা মতলেব হোসেন ও ফুফাতো ভাই মামুন।
লাল্টুর দুলাভাই শাহাজান বলেন, আগে থেকেই ওঁত পেতে থাকা মিজান, সোহাগ ডাক্তার, রশিদ ও রেজা দেশীয় অস্ত্র দা ও চাইনিজ কুড়াল দিয়ে লাল্টুর ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়। হামলায় লাল্টুর ডান হাতের কব্জির অর্ধেক বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তার মাথা ও ঘাড়ে গুরুতর জখম হয়। তাকে বাঁচাতে গিয়ে তার বাবা ও ভাই মামুনও হামলার শিকার হন। স্থানীয়রা ছুটে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে আহতদের উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। লাল্টুর অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকায় রেফার করা হয়। তিনি আরও বলেন, লাল্টুর অবস্থা আশঙ্কাজনক। ডাক্তার বলেছে লাল্টুর কব্জি কেটে ফেলতে হবে।
পৃথক অপর একটি সূত্র জানায়, অস্ত্র হাতে পালানোর সময় স্থানীয় লোকজন মিজান গংকে ধাওয়া করে। এতে মিজান চক্রের রশিদ আহত হন এবং কোনোমতে পালিয়ে যান। তাকে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবিরা সুলতানা মুন্নী বলেন, মিজান, সোহাগ ডাক্তার, রশিদ, রেজাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, চাল আত্মসাৎ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে। গত ৫ আগস্টের পর তারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। এ চক্রের অনেকেই ইতিমধ্যে দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন। এ চক্রের অপকর্মের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় লাল্টুর ওপর হামলা চালানো হয়েছে।
অন্য একটি সূত্র জানায়, উপজেলা বিএনপির নির্বাচনে মোর্তজা এলাহী টিপু বিপুল ভোটে পরাজিত হন সাবিরা সুলতানা মুন্নীর কাছে। এরপর থেকেই দলের অভ্যন্তরে প্রতিহিংসার রাজনীতি শুরু হয়।
এ বিষয়ে সাবেক আহবায়ক মোর্তজা এলাহী টিপুর বক্তব্য নেয়া সম্ভাব হয়নি।
ঝিকরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নুর মোহাম্মদ গাজী বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এবং অনলাইন জুয়াকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হয়েছে। জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
##