
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সোমবার হোয়াইট হাউসে এক নৈশভোজে মিলিত হন। সেখানে তারা গাজা থেকে হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে জোরপূর্বক অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।
হোয়াইট হাউসের ব্লু রুমে আয়োজিত নৈশভোজে নেতানিয়াহু বলেন, গাজার বাসিন্দাদের এমন একটি বিকল্প থাকা উচিত, যেখানে তারা চাইলে গাজায় থাকতে পারবেন, আবার চাইলে অন্য কোনো দেশে চলে যেতে পারবেন। তাঁর ভাষায়, গাজা যেন একটি কারাগার না হয়, বরং হয়ে ওঠে একটি মুক্ত এলাকা।
নেতানিয়াহু আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একযোগে ইসরাইল এমন কিছু দেশ খুঁজছে, যারা ফিলিস্তিনিদের ‘ভবিষ্যৎ উন্নয়ন’-এ আগ্রহ দেখাতে পারে। এই উদ্যোগের প্রতি ট্রাম্পও আশাবাদ প্রকাশ করে বলেন, ‘চারপাশের দেশগুলো থেকে আমরা দারুণ সহযোগিতা পাচ্ছি। তাই ভালো কিছু হতে যাচ্ছে।’
তবে বিশ্লেষকরা এই পরিকল্পনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, একে ‘স্বেচ্ছাচারী অভিবাসন’ বলে প্রচার করা হলেও, এর প্রকৃত উদ্দেশ্য জাতিগত নির্মূলের শামিল। আল-জাজিরার মধ্যপ্রাচ্য প্রতিনিধি হামদা সালহুত মন্তব্য করেছেন, ‘এটি চরম এক বিপর্যয়।’
সাবেক ইসরাইলি কূটনীতিক আলোন পিনকাস বলেন, ‘যে কোনো প্রস্তাব থাকলেই তা বাস্তবায়নযোগ্য বা বাস্তবসম্মত হয়ে ওঠে না।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত ফেব্রুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ‘প্যালেস্টিনিয়ান রিভিয়েরা’র কথা বলেছিলেন, কিন্তু মাত্র ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে নিজের অবস্থান থেকে সরে আসেন।
অন্যদিকে, কাতারে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত ৬০ দিনের একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে পরোক্ষ আলোচনা চলছে। তবে এখন পর্যন্ত এ আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি।
নৈশভোজে নেতানিয়াহু ও ট্রাম্পের আলোচনায় ইরান ইস্যুও উঠে আসে। এ সময় নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে একটি চিঠি দেন এবং দাবি করেন, ওই চিঠির মাধ্যমে তাকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।