
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে ফেনী জেলায় টানা বৃষ্টিপাতের কারণে ব্যাপক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল রাত থেকে শুরু হওয়া ভারী বর্ষণ এখনো থামেনি। এতে শহরের প্রধান সড়কসহ অধিকাংশ আবাসিক এলাকা কোমরপানি পর্যন্ত প্লাবিত হয়েছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।
ফেনী শহরের পাঠান বাড়ি, ডাক্তার পাড়া, মাস্টার পাড়া, শান্তি ছায়া, শান্তি কম্পানি রোডসহ প্রায় সব আবাসিক এলাকার রাস্তাগুলো পানির নিচে চলে গেছে। জলাবদ্ধতার কারণে মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছে না। সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে স্কুলগামী শিক্ষার্থী, কর্মজীবী মানুষ ও দিনমজুর শ্রেণি।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে অনেক বাড়িঘরের ভেতরে। রান্নাঘর ও আসবাবপত্র পানিতে ডুবে গেছে। বিদ্যুৎ না থাকায় পানির পাম্প বন্ধ রয়েছে, ফলে বিশুদ্ধ পানির সংকটও দেখা দিয়েছে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত পুরো এলাকাজুড়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল।
এদিকে কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে জেলার মুহুরী ও সিলোনিয়া নদীর পানি বিপদসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, মুহুরী ও সিলোনিয়া নদীর অন্তত ৫০ মিটার বাঁধ ভেঙে গেছে, যার ফলে আশপাশের এলাকা প্লাবিত হচ্ছে দ্রুতগতিতে।
ফেনী সদর, ফুলগাজী ও পরশুরামসহ বিভিন্ন উপজেলায় প্রায় হাজার হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। শহরের রাস্তাঘাট, বাজার, ঘরবাড়ি ও কৃষিজমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এর ফলে ফেনীর স্বাভাবিক জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বাজারে স্বাভাবিক সরবরাহে বিঘ্ন ঘটায় নিত্যপণ্যের দামও কিছুটা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, জরুরি ভিত্তিতে বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে শুকনো খাবার ও জরুরি সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিস ও স্বেচ্ছাসেবী দলগুলোও উদ্ধারকাজে অংশ নিচ্ছে।
আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, বৃষ্টিপাত আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফেনীবাসীকে সতর্ক থাকার এবং প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।