
ইসরায়েলের বিমান ও স্থল হামলায় গাজায় রবিবার তিন শিশুসহ অন্তত ১৪ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলটির বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা।
সংস্থাটির মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, গাজার চারটি স্থানে চালানো বিমান হামলায় ১৩ জন এবং একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে বন্দুক হামলায় একজন নিহত হন।
তিনি জানান, গাজার জেয়তুন এলাকার একটি বাড়িতে চালানো বিমান হামলায় বাড়িটি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে যায় এবং এতে দুই শিশু প্রাণ হারায়। নিহতদের একজনের স্বজন আবদেল রহমান আজম বলেন, ‘‘বিস্ফোরণের শব্দ শুনে দ্রুত ছুটে গিয়ে আগুন দেখতে পাই। বাড়িটি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। আমরা সেখান থেকে শহীদ দুই শিশু ও ২০ জন আহতকে উদ্ধার করেছি। তারা কোনো সতর্কতা ছাড়াই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। আমরা প্রতিদিন আতঙ্ক নিয়ে ঘুমাতে যাই, জানি না জীবিত অবস্থায় ঘুম থেকে উঠতে পারব কি না।’’
বাসাল আরও জানান, দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনুস শহরে একটি আশ্রয় তাঁবুতে চালানো ড্রোন হামলায় এক শিশুসহ পাঁচজন নিহত হন। এছাড়া রাফা শহরের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে বন্দুক হামলায় ত্রাণের জন্য অপেক্ষমাণ একজন প্রাণ হারান।
এই হামলাগুলোর বিষয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য না করলেও ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, তারা ২০২৩ সাল থেকে গাজায় চালানো সামরিক অভিযানের মাধ্যমে হামাসের সশস্ত্র ক্ষমতাকে ভেঙে ফেলতে কাজ করে যাচ্ছে।
এদিকে রবিবার গাজার উত্তরাঞ্চলের কিছু অংশ দ্রুত খালি করার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র অভিচয় আদ্রে বলেন, ‘‘এই এলাকাগুলিতে সেনাবাহিনী তীব্র শক্তির সঙ্গে কাজ করবে এবং সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর সক্ষমতা ধ্বংস করার জন্য সামরিক অভিযানগুলো আরও তীব্র এবং বিস্তৃত হবে।’’ তিনি ওই এলাকার বাসিন্দাদের দ্রুত দক্ষিণের দিকে সরে যেতে বলেন।
হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজা অঞ্চলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সাল থেকে ইসরায়েলের চালানো সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত অন্তত ৫৬ হাজার ৪১২ জন নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক। জাতিসংঘ এই মৃত্যুর সংখ্যা ‘বিশ্বাসযোগ্য’ বলে স্বীকার করেছে।