Thursday, May 29
Shadow

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তি নিষিদ্ধ করল ট্রাম্প প্রশাসন

বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন ও সম্মানজনক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তি করার অধিকার হারিয়েছে। বৃহস্পতিবার এক চূড়ান্ত ঘোষণায় মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ (DHS) জানিয়েছে, হার্ভার্ড ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে এফ (F) ও জে (J) ক্যাটাগরির ভিসাধারী, অর্থাৎ বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারবে না।

এই সিদ্ধান্তের ফলে বর্তমানে হার্ভার্ডে অধ্যয়নরত বিদেশি শিক্ষার্থীরা আইনিভাবে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান বজায় রাখতে চাইলে অন্য কোনো স্বীকৃত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর হতে বাধ্য হবেন।

সরকারের পক্ষ থেকে হার্ভার্ডকে ৭২ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়ে বলা হয়েছে, বিগত পাঁচ বছরের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের যেকোনো শাস্তিমূলক রেকর্ড এবং তা-সংক্রান্ত ভিডিও ও অডিও প্রমাণাদি জমা দিতে হবে। এসব তথ্য না দিলে বিশ্ববিদ্যালয়টির বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করার অধিকার চিরতরে বাতিল হয়ে যাবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।

এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষাব্যবস্থা ও বৈচিত্র্যপূর্ণ ক্যাম্পাস সংস্কৃতির জন্য এক বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ক্যালিফোর্নিয়ার এক ফেডারেল বিচারক এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একটি সাময়িক স্থগিতাদেশ জারি করেছেন।

বিচারক লিও গার্ডেন বলেন, আমরা এখানে এসেছি মত প্রকাশের স্বাধীনতা, শিক্ষার স্বাধীনতা এবং একটি উদার মুক্ত চিন্তার পরিবেশের খোঁজে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নীতিগুলো এখন সেই মৌলিক মূল্যবোধকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছে। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ছাড়া হার্ভার্ড আর আগের মতো থাকবে না।”

বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য হার্ভার্ড দীর্ঘদিন ধরে একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য। প্রতিবছর এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসা বিদেশি শিক্ষার্থীরা টিউশন ফি বাবদ লাখ লাখ ডলার দিয়ে থাকে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক কাঠামোর একটি বড় অংশ গঠন করে। ফলে এই নিষেধাজ্ঞা হার্ভার্ডের জন্য আর্থিকভাবেও একটি বড় বিপর্যয়।

বিশ্লেষকদের মতে, এই সিদ্ধান্ত শুধু হার্ভার্ড নয়, গোটা যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থাকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একটি সংকটের মুখে ঠেলে দেবে। বিদেশি শিক্ষার্থীরা যে বৈচিত্র্য, সৃজনশীলতা ও গ্লোবাল পার্সপেকটিভ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিয়ে আসে—তা হারানো শুধু শিক্ষা নয়, যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যতের জন্যও ক্ষতিকর হতে পারে।

প্রতিবেদন | সূত্র: বিবিসি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *