Monday, May 19
Shadow

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার উন্মুক্ত: ১২ লাখ বাংলাদেশি শ্রমিকের সুযোগ

বাংলাদেশের শ্রমিকদের জন্য আবারও উন্মুক্ত হচ্ছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। আগামী কয়েক বছরে দেশটি বাংলাদেশ থেকে ১২ লাখ শ্রমিক নেবে বলে আশা করছে অন্তর্বর্তী সরকার। এরমধ্যে প্রায় পঞ্চাশ হাজার শ্রমিককে বিনা খরচে নেওয়া হবে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে মালয়েশিয়ার পুত্রজয়ায় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান এবং আইন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাশুসন ইসমাইল ও মানবসম্পদ মন্ত্রী স্টিভেন সিম চি কেওয়ার সঙ্গে যৌথ সভায় মিলিত হবেন। সেখানে এ সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা রয়েছে।

এর আগে গত বছর ৪ অক্টোবর সংক্ষিপ্ত সফরে বাংলাদেশে আসেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ড. আনোয়ার ইব্রাহিম। রাজধানী ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে।

বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ড. ইউনূস বলেন, “মালয়েশিয়ার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে চাই। দুই দেশই সম্পর্ক এগিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে। অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, শিক্ষা, প্রযুক্তি, মানবসম্পদ উন্নয়ন, জনশক্তি রপ্তানি, যোগাযোগ, অবকাঠামো উন্নয়ন, প্রতিরক্ষা সহযোগিতাসহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কর্মসংস্থান তৈরি, ভিসা সহজীকরণের বিষয় নিয়েও আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।”

ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ড. আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, “মানুষের মর্যাদা রক্ষায় ড. ইউনূসের ভূমিকা আমরা জানি। তাকে ব্যক্তিগতভাবে আমি চিনি। তাই তার ওপর ভরসা রাখছি। বাংলাদেশের বন্ধু হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সর্বাত্মক সমর্থন থাকবে।”

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশের কর্মীরা আধুনিক দাস নয়। তাদের সুরক্ষার বিষয়ে আমরা কাজ করছি। বন্ধ শ্রম বাজার আবার উম্মুক্ত করে বন্ধুকে দেওয়া কথা রাখতে যাচ্ছি।”

জানা গেছে, মালয়েশিয়া আগামী কয়েক বছরে প্রায় ১২ লাখ শ্রমিক নেবে। এতে বাংলাদেশের অর্থনীতি উপকৃত হবে। শ্রমবাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশটিতে সাধারণ শ্রমিকের বেতন মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর চাইতে দ্বিগুণ বা তারও বেশি। কিছু জটিলতায় প্রায় এক বছর ধরে স্থবির ছিল এই বিশাল শ্রমবাজার। ধীরে ধীরে সেই জটিলতা কেটেছে, মালয়েশিয়ায় লাখ লাখ শ্রমিক বৈধভাবে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে।

বিশাল এই শ্রমবাজার উন্মুক্ত হলে বৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া শ্রমিক গেলে দেশের অর্থনীতি উপকৃত হবে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা আশা করছেন, এর মাধ্যমে দেশের রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে।

বাংলাদেশের কুয়ালালামপুর দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করলে তারা জানান, মালয়েশিয়া পর্যাপ্ত সংখ্যক শ্রমিক পাঠানো গেলে বছরে প্রায় পাঁচ বিলিয়ন ডলার বাড়তি রেমিটেন্স পাবে বাংলাদেশ। তাদের মতে, আমাদের দেখা উচিত কে শ্রমিক পাঠালো বা কোন এজেন্সি পাঠালো সেটি নয়; বরং কম অভিবাসন ব্যয়ে শ্রমিকদের নিরাপদ অভিবাসনের সুযোগ নিশ্চিত করাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। স্বল্প খরচে শ্রমিকরা নিরাপদ অভিবাসনের সুযোগ পাবেন বলেও তারা আশা প্রকাশ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *