
ইসমাইল ইমন, চট্টগ্রাম: কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন সময়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নির্বিচারে গুলি চালানো চট্টগ্রামের লোহাগাড়া থানার পানত্রিশা ৯নং ওয়ার্ডের মৃত জাগির মিয়ার পুত্র সিরাজুল ইসলাম বৈধ অবৈধ সকল ব্যবসা বাণিজ্য এখনো বহাল তবিয়তে চলছে।
লোহাগাড়ার ‘ডন’ নামে খ্যাত একাধিক মামলার আসামি সিরাজুল ইসলাম এখনো গ্রেফতার না হওয়ার জনমনে নানান প্রশ্ন উঠেছে।
স্থানীয় ভুক্তভোগীরা বলছে কি কারণে কোন অদৃশ্য ইশারায় পলাতক এই খুনির ব্যবসা বাণিজ্য এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছে প্রশাসনের তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।

একাধিক স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সিরাজুল ইসলামের পেটোয়া বাহিনীরা এখনো লোহাগাড়ায় চুরি ছিনতাই ও দখল বাণিজ্য সরব রয়েছে।
সিরাজুল ইসলামের নির্দেশে লোহাগাড়ার শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করার পাঁয়তারা চলছে। খুন ধর্ষণ, চুরি, ছিনতাই ও দখল বাণিজ্যের মাধ্যমে এ বাহিনী মানুষের মাঝে আতংক সৃষ্টি করে এখনো রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করছে।
জানা যায়, একাধিক মামলার আসামি সিরাজুল ইসলাম গা ডাকা দিলে ও এখনো তার ইশারায় চলছে লোহাগাড়ায় দখলবাণিজ্য। স্থানীয় লোকজন বলছেন, জুলাই-২৪ গণহত্যা মামলার আসামি সিরাজুল ইসলামের বাহিনীকে ডেভিল হান্ট অভিযানের মাধ্যমে স্ব-মূলে নির্মূল করতে না পারলে ভালোবাসার বাংলাদেশ গঠনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ব্যাহত হবে।
সিরাজুল ইসলাম তিনি ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনার একজন দোসর। যার ফলে সে জুলাই-২৪ ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিরুদ্ধে তার সন্ত্রাসীবাহিনী নেয়ে সশস্ত্র অবস্থান নিয়ে অনেক মায়ের বুক খালি করেছে। সে সময় তার চাঁদাবাজ সন্ত্রাসী বাহিনীর হাতে অনেক শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার পাশাপাশি আহত হয়েছে অনেকে।
খুনি হাসিনার দোসর সিরাজুল ইসলাম বর্তমানে গা ঢাকা দিয়ে আত্মগোপনে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নিহত শহীদের পরিবারের লোকজন খুনি হাসিনা ও তার সহযোগীদের নামে হত্যা মামলা রুজু করার পর পর গা-ডা
কা দিয়েছেন সিরাজুল ইসলাম। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমাতে আওয়ামী লীগের পক্ষে পুরো লোহাগাড়ায় অবস্থান নিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, আ.লীগ নেতা সিরাজুল ইসলাম আত্ম গোপনে থাকলেও এখানকার প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে চলছে তার বৈধ অবৈধ সকল ব্যবসা।
সরকারী জমি দখল করে বাড়ি, ক্যাসিনো ব্যবসা, কী নেই তার। আর এসব কিছুই সম্ভব হয়েছে আওয়ামীলীগের রাজনীতির সুবাধে। সিরাজুল ইসলাম গত কয়েক বছরের কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন।
রাজনৈতিক প্রভাব ও এলাকা নিয়ন্ত্রণ করতে ওয়ার্ডে রয়েছে তার শতাধিক ক্যাডার বাহিনী। ৫ আগস্টের পর এদের অনেকই রাজনৈতিক ভোল পাল্টিয়ে এখনো তাদের দখল বাণিজ্য করে যাচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায় সিরাজুল ইসলাম দখল-চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজি-ক্যাসিনো ব্যবসাসহ নানা অপকর্মে জড়িত ছিলো। ব্যক্তিমালিকানাধীন প্লটে মার্কেট বানানো, দখলবাজি, ফুটপাত ও পরিবহন চাঁদাবাজিসহ জুয়া ও ক্যাসিনো কারবার থেকে প্রতিমাসে এখনো মোটা অংকের চাঁদা তোলার অভিযোগ উঠেছে সাবেক আ.লীগ নেতা সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
সূত্রে আরও জানায়, ফুটপাত দখল, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন ক্লাবে পরিচালিত জুয়া ও ক্যাসিনো কারবারে এখনো নিয়মিত ভাগ পান সিরাজ বাহিনী ।
নির্ভরযোগ্য সূত্র জানা যায়, লোহাগাড়া বাজারে কাঁচাবাজার বসিয়ে প্রতি মাসে অর্ধ কোটি টাকা ভাড়া আদায় করতেন সিরাজ বাহিনী। এসব অর্থে গত ১০ বছরের ব্যবধানে গড়েছেন তিনি অঢেল সম্পদ। এ সব অবৈধ সম্পদ ভোগ করে বর্তমানে তিনি পরিবার নিয়ে বিলাসী জীবন যাপন করছেন।
স্থানীয়রা ছাত্র হত্যার একাধিক মামলার আসামি সিরাজুল ইসলাম ও তার সহযোগীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে তার অবৈধ সম্পদ পাহাড়াদানকারীদের চিহ্নিত করার দাবি জানান।
আওয়ামীলীগের কার্যকলাপ হাস্যকর ছাড়া কিছুই না। সাধারণ জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন হলেও তার দোসররা সাধারণ মানুষের জানমালের ক্ষতি করার চেষ্টা করছে। দেশের পরিবেশকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে তারা সারা বাংলাদেশব্যাপী তাণ্ডব চালানোর পরিকল্পনায় মগ্ন। সাধারণ মানুষের রক্তের দাগ এই বাংলাদেশ থেকে এখনো মুছে যায়নি। আওয়ামীলীগ ও প্রশাসন বিগত দিনে বিএনপি’র নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের ওপর জুলুম নির্যাতন করেছে। পুলিশের আজকের ভূমিকা লোহাগাড়া সাধারণ মানুষের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। হত্যা মামলা সহ ৬ মামলার আসামি, কুখ্যাত সন্ত্রাসী ” সিরাজ” কে গ্রেপ্তার করা হউক। সে এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে। প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব রেখেছে।
সে চান্দগাও থানার মামলা নং ২৬(৯)২৪ (৭৬ নং আসামী), কোতোয়ালি থানার মামলা নং, ১৪(১১)২৪ (২৪২ নং আসামি), বাকলিয়া থানার মামলা নং- ১(১১)২৪ (৪৮ নং আসামি), সিআর মামলা নং ২৩৮৬/২৪ (৬০ নং আসামি), সিআর মামলা নং ২৮৪৯/২৪ (১১৬ নং আসামি)।