
চীনের জনপ্রিয় অ্যানিমেশন চরিত্রগুলো এখন আর শুধু পর্দায় নয়, এবার তারা বাস্তবের রঙিন দুনিয়ায় হাজির হয়েছে শিশু ও অভিভাবকদের জন্য। শাংহাই অ্যানিমেশন ফিল্ম স্টুডিওর উদ্যোগে চালু হয়েছে দেশের প্রথম সম্পূর্ণ চীনা অ্যানিমেশন আইপি –ভিত্তিক ইন্টাররেকটিভ থিম পার্ক, যা গ্রীষ্মের ছুটিতে পরিণত হয়েছে একটি প্রধান পারিবারিক আকর্ষণে।
শাংহাইয়ের গ্লোবাল হারবারে অবস্থিত এই থিম পার্কে প্রাণ ফিরে পেয়েছে চীনের ঐতিহ্যবাহী জনপ্রিয় অ্যানিমেশন চরিত্রগুলো—সুন উখং, কালাবাশ ব্রাদার্স, ডিটেকটিভ ব্ল্যাক ক্যাট, নয় রঙের হরিণ এবং সাহসী ন্যচা। যারা একসময় টেলিভিশনের স্ক্রিনে চীনের লাখো শিশুর শৈশব রাঙিয়ে দিয়েছিল, এবার তারা জীবন্ত রূপে হাজির হয়েছে শিশুদের সামনে।
এই পার্ক শুধু দেখার জন্য নয়, বরং বাচ্চারা এখানে নানান ইন্টাররেকটিভ গেমসেও অংশ নিতে পারছে, চড়ছে স্লাইডে, উঠছে ক্লাইম্বিং ওয়ালে। ফলে বিনোদন আর একটিভিটির এক অপূর্ব সংমিশ্রণ তৈরি হয়েছে।
একজন অভিভাবক বলেন,পার্কে ঢুকেই আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। এগুলোই তো আমার শৈশবের চরিত্র—সান উখং, ন্য চা, ব্ল্যাক ক্যাট! এখন আমি চাই আমার মেয়েও এদের চিনুক, ভালোবাসুক।
এই পার্ক শুধু শাংহাইবাসীদের জন্য নয়, বরং গোটা ইয়াংৎসে রিভার ডেল্টা অঞ্চল থেকে আসছে হাজারো পরিবার। শিশুদের খুশি আর অভিভাবকদের নস্টালজিয়া, দুটোর এক চমৎকার মেলবন্ধন ঘটছে এই থিম পার্কে।
শহরের পর্যটন শিল্পও এই জনপ্রিয় থিম পার্ককে ঘিরে এক নতুন রূপ নিচ্ছে। স্থানীয় ট্যুর অপারেটররা ইতোমধ্যে এই আকর্ষণকে অন্তর্ভুক্ত করেছে একাধিক ভ্রমণ প্যাকেজে।
নতুন হপ–অন–হপ–অফ বাস সার্ভিস সংযুক্ত করেছে শহরের গুরুত্বপূর্ণ দর্শনীয় স্থানগুলো—যেমন চিনমাও টাওয়ার, নর্থ বান্ড ইত্যাদি।
এই বাস সার্ভিসের পাশাপাশি এখন থাকছে নৌকা ভ্রমণের সুযোগও, যা একটি টিকিটেই মিলছে, দামও তুলনামূলকভাবে কম।
এক পর্যটন প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক চৌ ওয়েইহং বলেন, ‘আগে শুধু বাসেই ঘোরা যেত, এখন বাসের পাশাপাশি বোটও রয়েছে। তাই গত বছরের তুলনায় এবার আমাদের বিক্রি পাঁচ থেকে ছয় গুণ বেড়েছে।‘
শাংহাইয়ের এই অ্যানিমেশন থিম পার্ক শুধুমাত্র একটি পারিবারিক বিনোদন কেন্দ্র নয়—এটি একটি সাংস্কৃতিক সেতুবন্ধনও। এটি প্রজন্মের পর প্রজন্মের মধ্যে গল্প, স্মৃতি আর আনন্দ ভাগাভাগি করার এক অপূর্ব প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে।
যারা শৈশবের প্রিয় কার্টুন চরিত্রগুলোর সঙ্গে একবার আবার দেখা করতে চান, কিংবা তাদের সন্তানদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চান সেই স্মৃতিময় জগত—তাদের জন্য এই পার্ক একটি অবশ্যই ঘুরে দেখা উচিত গন্তব্য।
আফরিন মিম, সিএমজি বাংলা