
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাটজ ঘোষণা দিয়েছেন, গাজার পুরো জনগণকে দক্ষিণের রাফাহ শহরের ধ্বংসস্তূপের ওপর গড়ে তোলা একটি ‘মানবিক শহরে’ স্থানান্তরের জন্য ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার ইসরায়েলি গণমাধ্যমে প্রকাশিত এই তথ্য নিয়ে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বুধবার (৯ জুলাই) একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাটজ জানিয়েছেন, পরিকল্পনার প্রথম ধাপে গাজার আল-মাওয়াসি এলাকা থেকে বিতাড়িত প্রায় ৬ লাখ ফিলিস্তিনিকে ওই নতুন শিবিরে রাখা হবে। আর পরবর্তী সময় ধাপে ধাপে গাজার প্রায় ২১ লাখ মানুষকেই সেখানে স্থানান্তর করা হবে।
এই স্থানান্তর প্রক্রিয়ার বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, শিবিরে প্রবেশের আগে প্রত্যেক ফিলিস্তিনিকে স্ক্যানিংয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হবে, যাতে নিশ্চিত হওয়া যায় যে তারা কেউ হামাসের সদস্য নয়। স্ক্যান পাস করলেই কেবল শিবিরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে। তবে একবার প্রবেশের পর শিবির থেকে আর বের হওয়া যাবে না। মূলত গাজার পুরো জনগণকেই ওই নির্দিষ্ট এলাকায় অবরুদ্ধ করে রাখা হবে।
ইসরাইলি মন্ত্রী আরও জানান, গাজাবাসীদের বিদেশে অভিবাসনের একটি পরিকল্পনা রয়েছে, যেটির ধারণা প্রথম দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এখন সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তিনিও প্রস্তুত রয়েছেন।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র সফরে থাকা ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই অভিবাসন পরিকল্পনার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। সোমবার হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে নৈশভোজে তিনি বলেন,
“আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি এমন কিছু দেশকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি, যারা ফিলিস্তিনিদের জন্য ‘উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ’ নিশ্চিত করতে চায়। আমরা ইতিমধ্যে কয়েকটি দেশের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পেতে যাচ্ছি।”
কাটজ আরও জানান, যদি পরিস্থিতি অনুকূলে থাকে, তাহলে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে প্রস্তাবিত ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির সময়েই শিবির নির্মাণের কাজ শুরু হতে পারে।
তবে জাতিসংঘ এ বিষয়ে আগেই কড়া সতর্কতা জারি করেছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, কোনো দখলীকৃত ভূখণ্ডের জনগণকে জোর করে স্থানান্তর বা বহিষ্কার করা আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী।
এ বিষয়ে এখনো ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ কিংবা হামাসের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।