Saturday, July 12
Shadow

স্টাইল ঠিক রেখে পৃথিবী বাঁচানোর সহজ উপায়!

ফাস্ট ফ্যাশন এখন এমন এক দৈত্য, যে প্রতিদিন নতুন জামা চাই—আর সেটা বানাতে বানাতে পৃথিবী হাঁপিয়ে উঠেছে। গত ২০ বছরে পোশাক তৈরির পরিমাণ দ্বিগুণ হয়েছে, কিন্তু আলমারির জায়গা তো আর বাড়েনি! এই ফ্যাশনের নামে তৈরি হচ্ছে এমন সব বর্জ্য, যা মাটি, পানি, প্রাণী—সবকিছুকেই বিরক্ত করে তুলেছে। ভাবুন, আপনি ঝলমলে পোশাকে সেলফি তুলছেন আর পাশে দাঁড়িয়ে একটি নদী কাদায় কাদায় কাদছে!

environmental friendly fashion

এই শিল্পের দোষেই পৃথিবীতে কার্বন ডাই-অক্সাইডের ১০ শতাংশ নির্গমন হয়—মানে গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের জন্য আমাদের ফ্যাশন সেন্সও দায়ী। তাই সময় এসেছে একটু টেকসই ফ্যাশনের দিকে পা বাড়ানোর। ভাববেন না, এতে স্টাইল কমে যাবে। বরং, “আমি ইকো-ফ্রেন্ডলি, বেবি!”—এই এক কথাতেই আপনি হয়ে যাবেন ট্রেন্ডসেটার।

টেকসই উপকরণ? হ্যাঁ, ফ্যাশনেও সবুজ চিন্তা!

পোশাক কিনবেন তো? আগে দেখে নিন সেটা বানাতে প্রকৃতির কতটা মাথাব্যথা হয়েছে। কীটনাশকমুক্ত জৈব তুলা, শণ, পাট কিংবা বাঁশ—এই উপকরণগুলো শুধু গাছের না, আপনার স্টাইলেরও বন্ধু।

আর সেই রিসাইকেলড প্লাস্টিক থেকে বানানো পোশাক? হ্যাঁ, যেটা একসময় পানির বোতল ছিল, এখন সেটা আপনার শরীরে ঝলমল করছে। দারুণ না?

নৈতিক ব্র্যান্ড: ওরা শুধু জামা না, জামার সঙ্গে জবাবদিহিও বিক্রি করে

যে ব্র্যান্ড শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি দেয়, পরিবেশ রক্ষায় সচেতন, আর তাদের অফিসে গাছের চেয়ে বেশি প্লাস্টিক নেই—তাদেরই পাশে দাঁড়ান। কারণ শেষমেশ, ভালো মানুষরাই ফ্যাশনের আসল নায়ক।


মিনিমালিজম মানে কী? ‘কম কিনুন, বেশি পরুন’—আর আলমারি খুললে পোশাক পড়ে না মাথায়

একটা জামা কি একবার পরলেই সে “এক্স” হয়ে যাবে? না! জামাকাপড়কে ভালোবাসতে শিখুন। একই পোশাকে আলাদা স্টাইল তৈরি করা এখনকার সবচেয়ে বুদ্ধিদীপ্ত ট্রেন্ড। আর মনে রাখবেন, ফ্যাশন আইকন হতে হলে শপিং কার্ড নয়, দরকার কল্পনা শক্তি।

মেরামত, পুনঃব্যবহার ও আপসাইকেল—পুরনো জিনিস নতুন করে ভালোবাসা

ছেঁড়া জামা মানেই তার মৃত্যু না! একটা বোতাম লাগিয়ে, একটা টান মেরে, কিংবা দুটো সেলাই দিয়ে আবার জীবিত করা যায়।

আর পুরনো শাড়িকে কেটে বানিয়ে ফেলুন একটা স্কার্ট, কিংবা ছেঁড়া জিন্স দিয়ে বানিয়ে ফেলুন স্টাইলিশ ব্যাগ—যেটা দেখে বন্ধুরা বলবে, “দোস্ত, এটা কোথা থেকে কিনলি?” আপনি মুচকি হেসে বলবেন, “আপসাইকেল, বেবি!”

ডিক্লাটার আর অদলবদল—নতুন না কিনেও ওয়ারড্রোব হোক ঝলমলে

যে পোশাক আপনার চোখে পুরনো, সেটা অন্যের চোখে হতে পারে একদম ‘ইন’। তাই বন্ধুরা মিলে আয়োজন করুন পোশাক অদলবদলের এক মজার আসর। আপনি হয়তো পুরনো একটি টপ দিয়ে ফিরে আসবেন এক নতুন সিল্ক কামিজ নিয়ে!


ফ্যাশন মানে শুধু নতুন জামা না, এটা এক ধরনের মনোভাব। যদি সেই মনোভাব হয় সচেতন, পরিবেশবান্ধব, আর তাতে থাকে সামান্য রসিকতাও—তাহলে আপনি শুধু নিজেকে নয়, পৃথিবীকেও স্টাইলিশ রাখছেন।

তাই বলি, পরুন টেকসই, থাকুন দারুণ, আর গ্লোবাল ওয়ার্মিংকে বলুন – “ওই, আর না!”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *