
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর করতে সৌদি আরবের নাগরিকদের জন্য ভিসামুক্ত প্রবেশের কথা বিবেচনা করছে রাশিয়া। শনিবার গালফ নিউজের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, সৌদি নাগরিকদের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার একটি সম্ভাব্য পদক্ষেপ নিচ্ছে মস্কো।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ নিশ্চিত করেছেন, রাশিয়া বর্তমানে সৌদি নাগরিকদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া তুলে দেওয়ার পরিকল্পনায় কাজ করছে।
গতকাল শুক্রবার রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহানের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন ল্যাভরভ।
এ সময় তিনি রাশিয়া-সৌদি সম্পর্ককে “শক্তিশালী ও স্থিতিশীল” বলে অভিহিত করেন এবং ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে সৌদি আরবের ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থানের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
রাশিয়ায় ই-ভিসা চালু হওয়ার পর সৌদি পর্যটকদের আগমন ৫৭০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছে মস্কো। এ প্রসঙ্গে ল্যাভরভ বলেন,
‘ইউক্রেন সংকটের প্রতি রিয়াদের দায়িত্বশীল এবং নীতিগত দৃষ্টিভঙ্গির আমরা প্রশংসা করি।’
তিনি আরও বলেন, রাশিয়া আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় সৌদি আরবের ইতিবাচক ভূমিকার মূল্যায়ন করে, বিশেষ করে ইয়েমেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টায় দেশটির অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মস্কোতে অনুষ্ঠিত এই উচ্চপর্যায়ের আলোচনায় গাজা পরিস্থিতি ছিল শীর্ষ অগ্রাধিকার। এ প্রসঙ্গে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বলেন,
‘আমাদের তাৎক্ষণিক লক্ষ্য হওয়া উচিত একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি।’
তিনি আরও বলেন, গাজায় মানবিক বিপর্যয় এড়াতে এবং যুদ্ধ থামাতে আন্তর্জাতিক সমাজকে আরও টেকসই চাপ সৃষ্টি করতে হবে।
এছাড়াও আলোচনায় উঠে আসে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি। সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ ইস্যুতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা পুনরুজ্জীবিত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি আহ্বান জানান, তেহরান যেন আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (IAEA)-এর সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতা করে।
এই আলোচনাকে ঘিরে রাশিয়া ও সৌদি আরবের মধ্যে রাজনৈতিক, কূটনৈতিক এবং পর্যটন খাতে ঘনিষ্ঠতা আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসামুক্ত ভ্রমণের সুযোগ বাস্তবায়িত হলে এটি দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি বড় অগ্রগতি হবে।