Wednesday, July 2
Shadow

চীনের বেইহাং বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরা গ্রাজুয়েট অ্যাওয়ার্ড পেলেন নওগাঁর তারিকুল ইসলাম

মাহবুবুজ্জামান সেতু,নওগাঁ প্রতিনিধিঃ চীনের বেইহাং বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরা গ্রাজুয়েট অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন নওগাঁর রাণীনগরের সন্তান মো. তারিকুল ইসলাম (তাজ)।এ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ স্নাতকোত্তর শ্রেণীতে অসামান্য অবদানের জন্য এই সন্মাননা অর্জন করেন তিনি। চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের হাইডিয়ান জেলার সুয়েইউয়ান লু-তে অবস্থিত বেইহাং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান কাম্পাসে গত সোমবার দুপুর ২.৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিত  বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসিবে অ্যাওয়ার্ড তুলে দেন বেইহাং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ঝাও ওয়েই শেং। এসময় উপস্থিত ছিলেন, বেইহাং বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপ-পরিচালক প্রফেসর ঝাং ঝিহুই, আন্তর্জাতিক স্কুলের উপ-ডিন, প্রফেসর উ সিয়াওজুন, প্রফেসর সু ইউয়ান মিং প্রমুখ।
এ অনুষ্ঠানে একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল, তারিকুল ইসলাম সেরা গ্রাজুয়েট এওয়ার্ড পাওয়ার কারণে তার মেইন সুপারভাইজার প্রফেসর সু ইউয়ান মিং অর্থাৎ যার তত্বাবধানে গবেষণা করেছিলেন তিনিও সেরা শিক্ষক অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন!  এক কথায় গুরু-শিষ্যের একসঙ্গে বাজিমাত।
এর আগে তিনি চীন দেশের হুনান প্রদেশের রাজধানীতে  অবস্থিত চাংশা ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে মক্যোনিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং -এ স্নাতক সম্মান কৃতিত্বের সাথে সম্পূর্ণ করেন। সেখানেও তিনি সেরা গ্রাজুয়েট অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিলেন।
তার গবেষণা কেন্দ্রীভূত ছিল বিমানের নকশা, মনুষ্যবিহীন আকাশযান, বৈদ্যুতিক উল্লম্ব অবতরণ যান, এরোডাইনামিক্স এবং মেশিন লার্নিং। বর্তমানে তিনি বেইজিং-এর একটি এ্যারোস্পেস কোম্পানিতে এয়ারক্রাফট অ্যারোডাইনামিক ডিজাইন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত আছেন বলে জানিয়েছেন তারিকুল ইসলাম।  উক্ত অনুষ্ঠানে তার অনুভূতি প্রকাশ মূলক বক্তব্যে বলেন, আমার এই অর্জন উৎস্বর্গ করছি, প্রফেসর সু ইউয়ানমিং, বাবা-মা, স্ত্রী এবং দেশের সিনিয়র ভাই ও বন্ধু-বান্ধব এর প্রতি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নওগাঁর রাণীনগর উপজেলা সদরের বেলোবাড়ি গ্রামে ১৯৯৮সালের ১২এপ্রিলে জন্মগ্রহন করেন তারিকুল ইসলাম। তার বাবা মো. বুলেট হোসেন রাণীনগর আল-আমিন দাখিল সিনিয়র মাদ্রাসার শিক্ষক, মা মোছা: সুলতানা মোফতারুন বেগমও পেশায় একজন শিক্ষিকা। শিক্ষক দম্পত্তির বড় ছেলে তরিকুল ইসলাম ছোট বেলা থেকেই খুব মেধাবী ছিলেন। তিনি বেলোবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৫ম শ্রেণীতে বৃত্তি পেয়ে  রাণীনগর সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন, ২০১৫ সালে এসএসসি’তে জিপিএ-৫ পেয়ে ঢাকার সাভার ল্যাবরেটরি কলেজ থেকে ২০১৭ সালে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি  পাশ করে। সাভার ল্যাবরেটরি কলেজে প্রতিবছর ভালো ফলাফলের জন্যও একাধিক সম্মাননা – পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। পরে স্কলারশীপ পেয়ে চীন দেশের হুনান প্রদেশে অবস্থিত চাংশা ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’তে উচ্চ শিক্ষা অর্জনের লক্ষ্যে চীন দেশে যান বলে জানিয়েছেন তার বাবা মো. বুলেট হোসেন।


তারিকুল ইসলাম (তাজ) এর এই অসামান্য সাফল্যে দেশ ও জাতি গর্বিত। মা-বাবা, পরিবার-পরীজন সহ এলাকাবাসী  তারিকুলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও আল্লাহ তাআলার নিকট তার আগামীর কর্মজীবন সুন্দর সার্থক ও সাফল্য মুন্ডিতের জন্য দোয়া  এবং আর্শিবাদ কামনা করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *