
মহাদেবপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ নওগাঁর মান্দা-মহাদেবপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা পাঁঠাকাটা বাজারের পাশে আত্রাই নদীর পূর্ব তীরবর্তী বাঁধের রাস্তা সংলগ্ন পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা থেকে অবৈধভাবে মাটি কাটার অভিযোগে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আরিফুজ্জামান। গত শুক্রবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন তিনি। এর আগে গত বৃহস্পতিবার স্থানীয়দের মৌখিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে ও ইউএনও’র নির্দেশে সফাপুর ইউপি চেয়ারম্যান শামশুল আলম বাচ্চু ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মাটি কাটা বন্ধ করে দেন। অপরদিকে কেটে গচ্ছিত করে রাখা মাটিগুলো বাঁধের পাশে পূনরায় বিছিয়ে দেওয়ার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন ইউএনও । তাঁর নির্দেশনা মোতাবেক এসব মাটিগুলো বাঁধের পাশে বিছিয়ে দিয়েছেন মৃত আবেজ শাহ এর ছেলে আহাদ ও আতাব আলী গং।
২ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন বলেন,গত কয়েকদিন যাবৎ আত্রাই নদীর পূর্ব বাঁধের রাস্তা সংলগ্ন পানি উন্নয়ন বোর্ডের যেখান থেকে মাটি কাটা হচ্ছিলো। উক্ত স্থানে এর আগে ২ বার ভেঙ্গে প্লাবিত হয়ে গেছিলো। বর্তমানেও বাঁধের দু’পাশে পুকুর থাকায় এটি চরম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। এর পরেও স্থানীয় প্রভাবশালীরা বাঁধের পাশ থেকে মাটি কেটে বাঁধের উপর গচ্ছিত রেখে ছিলেন। এরপর বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে অবগত করা হয়। পরবর্তীতে ইউএনও মহোদয় এবং চেয়ারম্যান সাহেবের হস্তক্ষেপে সেটি বন্ধ করে দেয়া হয়। আগামীতে যদি কেউ অবৈধভাবে মাটি কাটা অথবা বালি তোলার চেষ্টা করে তবে আমরা কঠোর হস্তে তাদেরকে প্রতিহত করা হবে। এক্ষেত্রে সে যতোই প্রভাবশালী হোক না কেনো!
তিনি আরো বলেন যে, বিগত সময়ে এসব প্রভাবশালীদের কারণে আমরা বিভিন্নভাবে প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়েছি। আর যেনো কোন আওয়ামী দোসর মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, আমরা সেদিকে সচেষ্ট থাকবো। অবৈধভাবে মাটি কাটা বন্ধ করে দেওয়ায় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
অপরদিকে যারা মাটি কেটে গচ্ছিত করে রেখেছিলেন তাদের পরিবারের আব্দুল কাদের নামে একজন জানান যে,আসলে মাটিগুলো তার এক চাচা গরুর শেডে ভরাট দেওয়ার জন্য কেটে বাঁধের উপর একটি নির্দিষ্ট জায়গায় গচ্ছিত রেখেছিলেন। কিন্তু সেটির পরিমান অনেক বেশি পরিমান হওয়ায় মানুষের চোখ পরে যায়। আর সেকারণে স্থানীয় লোকজন শত্রুতামূলকভাবে তাদের বিরুদ্ধে এ্যাকশন নেওয়ার জন্য বিষয়টি ইউএনও এবং চেয়ারম্যানকে জানিয়েছে। এমনকি এখনো তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচার করা হচ্ছে । তার দাবি যে, যেখান থেকে মাটি কাটা হচ্ছিলো সেটি তাদের বিগত সময়ের বালির পয়েন্ট। আর সেকারণে নিজের প্রয়োজনে নির্দ্বিধায় সেখান থেকে মাটিগুলো কাটছিলেন তারা। কিন্তু স্থানীয়দের অভিযোগের প্রেক্ষিতে এবং চেয়ারম্যানের কথা মোতাবেক মাটি কাটা বন্ধ রেখেছেন। পরবর্তীতে ইউএনওর কথা মোতাবেক বাঁধের উপর গচ্ছিত করে রাখা মাটিগুলো বাঁধের পাশে বিছিয়ে দেয়া হয়েছে। এর জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।
মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আরিফুজ্জামান বলেন, স্থানীয়দের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা পাঁঠাকাটা বাজারের পাশে আত্রাই নদীর পূর্ব তীরবর্তী বাঁধের রাস্তা সংলগ্ন পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা থেকে অবৈধভাবে মাটি কাটা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও বাঁধের উপর গচ্ছিত করে রাখা মাটিগুলো বাঁধের পাশে বিছিয়ে দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়ার পর মাটিগুলো বাঁধের পাশে বিছিয়ে দিয়েছেন অভিযুক্তরা। আগামীতে যদি কেউ অবৈধভাবে মাটি কাটার চেষ্টা কওে,তবে আইনগত ব্যাবস্থা নেয়া হবে।