
নিজের ব্যক্তিগত জীবন এবং দুর্বল মুহূর্তগুলো নিয়ে বরাবরই খোলাখুলি কথা বলেন বলিউডের ‘মিস্টার পারফেকশনিস্ট’ আমির খান। সম্প্রতি ‘সিতারে জামিন পার’ ছবির এই অভিনেতা একটি সাক্ষাৎকারে ফিরে দেখেছেন জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময়— যখন তার প্রথম স্ত্রী রীনা দত্তের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয়।
ভারতের জনপ্রিয় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম দ্য ললনটপ-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আমির বলেন, ‘‘যেদিন রীনা বাড়ি ছেড়ে চলে গেল, আমি খুব একা বোধ করছিলাম। বুঝতে পারছিলাম না কী করবো। তখনই প্রথমবারের মতো মদ খেতে শুরু করি। এরপর টানা দেড় বছর, আমি প্রতি রাতে মদ খেতাম। ঘুমাতাম না— শুধু অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকতাম।’’
এই কঠিন সময়েই বলিউডের কয়েকজন সহকর্মী আমিরের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন জুহি চাওলা, সালমান খান এবং অনিল কাপুর।
জুহি চাওলার সঙ্গে সেই সময় সাত বছর কোনো যোগাযোগ ছিল না আমিরের। হঠাৎ একদিন জুহি ফোন করেন তাকে। সেই স্মৃতিচারণা করে আমির বলেন, ‘‘আচমকা জুহির ফোন আসে। বলে, ‘আমি তোমার সঙ্গে দেখা করতে চাই।’ আমি অবাক হয়ে যাই — সাত বছর আমরা কেউ কারও সঙ্গে কথা বলিনি। তারপর সে আসে এবং বলে, ‘আমি পত্রিকায় পড়েছি তুমি আর রীনা আলাদা হয়ে গেছো। এটা খুব খারাপ হয়েছে। কী হয়েছে, আমি শুনতে চাই — কিন্তু তুমি যাও, সবকিছু ঠিক করো।’ এই জায়গাটায় ওর বন্ধুত্বটা সত্যিই স্পষ্ট হয়ে ওঠে।’’
সেই সময়েই আমিরের বাড়িতে আসেন সালমান খান। আমির বলেন, ‘‘আমি তখন কারও সঙ্গে দেখা করতাম না। কিন্তু সালমান এল আমার বাড়িতে, ডিনার করলো, অনেক কথা হলো। আমি তখন আমার ভিতরে ঠিক যা অনুভব করছিলাম, সেটা ওর সঙ্গে শেয়ার করলাম। ও অনেক কথা বললো। সেই সময় থেকেই আমাদের বন্ধুত্ব শুরু হয় — ২০০১-২০০২ সালের দিকে।’’
জুহি এবং সালমানের পাশাপাশি অনিল কাপুরও সেই সময় আমিরের খোঁজ নিতে এসেছিলেন। তাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সহানুভূতির কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেছেন এই তারকা। তবে শাহরুখ খানের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আমির বলেন, ‘‘না, তখন শাহরুখের সঙ্গে আমার অতটা যোগাযোগ ছিল না।’’
সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া ‘সিতারে জামিন পার’ ছবিটি প্রযোজনা করেছেন আমির খান প্রডাকশনস এবং অপর্ণা পুরোহিত। ছবিতে আমির খান একজন বাস্কেটবল কোচের চরিত্রে অভিনয় করেছেন, যিনি ১০ জন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষকে প্রশিক্ষণ দেন।
ছবিটিতে অনেক নতুন মুখের অভিনয়ও দর্শকদের মন জয় করেছে। তারা নিজেদের চরিত্রগুলোকে বাস্তবসম্মতভাবে উপস্থাপন করেছেন। বক্স অফিসে ‘সিতারে জামিন পার’-এর সাফল্য প্রমাণ করে দিয়েছে— ভালো গল্প ও শক্তিশালী অভিনয় দিয়ে এখনো দর্শককে হলে ফেরানো সম্ভব।
তবে দ্বিতীয় সপ্তাহেও ছবিটি তার এই সাফল্য ধরে রাখতে পারে কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়।