
ইরানের রাজধানী তেহরানে এভিন কারাগারে ইসরায়েলের বিমান হামলায় কমপক্ষে ৭১ জন নিহত হয়েছেন। এ হামলা চালানো হয় গত ২৩ জুন, যুদ্ধবিরতির ঠিক আগে। নিহতদের মধ্যে ছিলেন কারা প্রশাসনের কর্মী, বন্দি, ইরানি সেনাবাহিনীর কিছু তরুণ সদস্য, বন্দিদের স্বজন এবং কারাগারের আশপাশে বসবাসকারী সাধারণ মানুষ।
রোববার (২৯ জুন) এই তথ্য জানিয়েছে ইরানের বিচার বিভাগ। সংবাদমাধ্যম দ্য ডন এবং টিআরটি ওয়ার্ল্ড–এর প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
ইরানের বিচার বিভাগের মুখপাত্র আসগর জাহাঙ্গীর ইরানি রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম মিজান-এ দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন, “এই হামলায় নিহতদের মধ্যে কারাগারের প্রশাসনিক কর্মীরা, ইরানি সেনাবাহিনীতে কর্মরত কিছু তরুণ, আটক বন্দিরা, বন্দিদের সঙ্গে দেখা করতে আসা তাদের স্বজন এবং আশপাশের সাধারণ মানুষ রয়েছেন।”
প্রসঙ্গত, ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে ১২ দিন ধরে চলা সরাসরি সংঘর্ষের পর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানো হয়, তার ঠিক আগেই এই হামলা চালানো হয়। ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এই সংঘর্ষে ইরানে মোট ৬১০ জন নিহত হন। তাদের মধ্যে ১৩ জন শিশু এবং ৪৯ জন নারী ছিলেন।
ইরান দাবি করেছে, ইসরায়েলের এই হামলার লক্ষ্য শুধু সামরিক বা পারমাণবিক স্থাপনাগুলোই ছিল না—বরং এর মাধ্যমে তারা ইরানের রাজনৈতিক কাঠামোর প্রতীকী প্রতিষ্ঠানগুলোকে উদ্দেশ্য করে হামলা চালিয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো এভিন কারাগার, যেখানে মূলত রাজনৈতিক বন্দিদের আটক রাখা হয়।
বিচার বিভাগ জানিয়েছে, এভিন কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের একটি অংশ এই হামলায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এবং জীবিত বন্দিদের তেহরান প্রদেশের অন্যান্য কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এ কারাগারে বহু বিদেশি নাগরিকও বন্দি রয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন দুই ফরাসি নাগরিক—সেসিল কোলার ও জ্যাক প্যারিস, যারা গত তিন বছর ধরে এই কারাগারে আটক রয়েছেন।
এই হামলার পর ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-নোয়েল বারো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার)-এ এক বিবৃতিতে বলেন, “তেহরানের এভিন কারাগারে ইসরায়েলি হামলা আমাদের নাগরিক সেসিল কোলার ও জ্যাক প্যারিসের জীবনকে হুমকির মুখে ফেলেছে। এটি সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য।”