Monday, June 30
Shadow

চীনে স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি বদলে দিচ্ছে রেশমচাষ

চীনের ছোংছিং শহরের ইয়োংছুয়ান জেলায় আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর একটি রেশমচাষ কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। প্রাচীন এই শিল্পকে রীতিমতো বদলে দিয়েছে এই প্রযুক্তি। স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তির ব্যবহারে ‘সিয়ানলং বেইজ’ নামের এই খামারে এখন শতভাগ জীবাণুমুক্ত পরিবেশে রেশমগুটির চাষ হচ্ছে, যা থেকে উৎপাদিত রেশম আরও মানসম্পন্ন, বেড়েছে উৎপাদনের পরিমাণও।

সাউথওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক শেন কুয়ানওয়াং জানান, ‘স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থায় গুটি পোকাগুলোকে আরও পরিষ্কার ও নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে লালন করা যাচ্ছে। যার কারণে রেশম তৈরি হচ্ছে খুবই উন্নতমানের।’

৪ হাজার বর্গমিটারের এই খামারে বছরে ২ কোটি ইউয়ান মূল্যের রেশম উৎপাদন হচ্ছে, যা প্রথাগত পদ্ধতির চেয়ে ২০ গুণ বেশি।

খামারে থাকা কৃত্রিম কক্ষগুলোর তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণে থাকে। রোবটচালিত যান ও ফিডারগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে গুটিপোকাদের খাবার পরিবেশন করে। আবার প্রথাগত তুঁতপাতার বদলে পোকারা খাচ্ছে পুষ্টিকর ‘নিউট্রিয়েন্ট মিল’, যা তুঁতপাতার গুঁড়া, ভুট্টা ও সয়াবিন দিয়ে তৈরি।

এই প্রযুক্তিতে এখন সারাবছরই গুটি পোকার চাষ সম্ভব হচ্ছে। সেইসঙ্গে পোকাদের রেয়ারিং ট্রেগুলো তাকে তাকেও সাজানো যায়, এত জায়গার ব্যবহারে চার থেকে পাঁচ গুণ বেড়েছে।

খামারটি বছরে ৪০ টন গুটি উৎপাদন করছে এবং এর জন্য প্রয়োজন হচ্ছে মাত্র ১০ জন দক্ষ কর্মী। আগে যেখানে অন্তত ৫০০ জন শ্রমিক লাগত।

এ ছাড়া, এখান থেকে উৎপাদিত খাঁটি সিল্ক প্রোটিন ব্যবহার করে তৈরি হচ্ছে কসমেটিক ও ওষুধের উপাদান। খামারে ওষুধি জাতের গুটি পোকা ‘বম্বিক্স ব্যাট্রাইটিকাস’-ও চাষ করা হচ্ছে, যা দিয়ে বছরে ১০০ টন কাঁচামাল প্রস্তুত হচ্ছে বিভিন্ন ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের জন্য।

চীনের বিজ্ঞানীরা ইতোমধ্যে সিল্ক-ভিত্তিক হাড় জোড়ার উপাদান এবং বিভিন্ন বায়োমেডিকেল পণ্যও তৈরি করেছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ উদ্যোগ চীনের ঐতিহ্যবাহী রেশমশিল্পকে আগামী প্রজন্মের প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত করে একটি নতুন দিগন্তে নিয়ে যাচ্ছে।

সূত্র: সিএমজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *