Monday, June 30
Shadow

পঙ্গপালের জোট বাঁধার সূত্র আবিষ্কার করলেন চীনা বিজ্ঞানীরা

ফসলের মহাশত্রু পঙ্গপালকে নিয়ন্ত্রণের কার্যকর একটি সূত্র খুঁজে পেয়েছেন চীনের গবেষকরা। পঙ্গপালের ঝাঁক তৈরি হওয়ার পেছনে জৈবিক প্রক্রিয়া ও ফেরোমোন নিঃসরণের উপায় খুঁজে পেয়েছেন তারা। এতে করে পঙ্গপালকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হলে তা হলে পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায় একটি বড় অগ্রগতি। বিশেষ করে কৃষি, মানবস্বাস্থ্য ও পরিবেশের দূষণ ঠেকানো যাবে এতে।

চায়না একাডেমি অব সায়েন্সেসের জুয়োলজি বিভাগ ও পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা ৪-ভিএ নামের এক বিশেষ রাসায়নিক সংকেতের উৎপাদন ও ছড়ানোর পুরো প্রক্রিয়াকে চিহ্নিত করেছেন। গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে বিজ্ঞান সাময়িকী ন্যাচার-এ।

জুয়োলজি বিভাগের গবেষক খাং লে জানিয়েছেন, পঙ্গপালের সদস্যরা একধরনের ফেরোমোন ছড়িয়ে অন্যদের ডাকে। এই রাসায়নিক সংকেতই তাদের ঝাঁকে ঝাঁকে একত্র হওয়ার মূল কারণ।

পোকামাকড়ের শরীরে থাকা বিশেষ কোষ বা গ্রন্থি থেকে এমন ফেরোমোন নির্গত হয়, যা প্রজনন, খাবার খোঁজা, ডিম পাড়া কিংবা দলে মিশে যাওয়ার মতো আচরণে কাজ করে।

পঙ্গপালের ৪ভিএ নিজের শরীরে তৈরি হয় না। এজন্য তাদের গাছের এক বিশেষ অ্যামিনো অ্যাসিড খেতে হয়।

গবেষকেরা এই রাসায়নিক তৈরির ধাপে ব্যবহৃত দুটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস এনজাইমও চিহ্নিত করেছেন। একটি ৪ভিপিএমটি১ ও অন্যটি ৪ভিপিএমটি২।

এনজাইম দুটি শুধু রাসায়নিকটি তৈরির জন্য নয়, বরং সেটি বন্ধ করারও চাবিকাঠি। উদ্ভিদে পাওয়া ৪-নাইট্রোফেনল নামের একটি উপাদান এই এনজাইমের সঙ্গে ভালোভাবে আটকে গিয়ে পঙ্গপালের সংকেত তৈরির পথ বন্ধ করে দিতে পারে।

এই ধারণা থেকে গবেষকেরা একধরনের ছোট মলিকিউল তৈরি করেছেন, যা দিয়ে পঙ্গপালের সংকেতের ওপর নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব হয়েছে। অর্থাৎ, পঙ্গপালকে ভুল সংকেত দিয়ে বিভ্রান্ত করা যাচ্ছে।

এই পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট জায়গায় পঙ্গপাল জড়ো করে সামান্য কীটনাশক ব্যবহার করা যাবে। এতে পরিবেশ ও কৃষির ক্ষতি কমবে।

মজার বিষয় হলো, যখন পঙ্গপাল দল বেঁধে থাকে তখন তারা একধরনের বিষাক্ত পদার্থ তৈরি করে, যাতে শিকারি পাখিরা তাদের খেতে চায় না। কিন্তু নতুন পদ্ধতিতে দলে মেশা বন্ধ হলে ওই বিষ তৈরি হবে না এবং পাখিরাও তাদের নিশ্চিন্তে খেতে পারবে।

সূত্র: সিএমজি বাংলা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *