
ফরিদপুর সদর উপজেলার কোমরপুর গ্রামের নারী উদ্যোক্তা কামরুন নাহার হাঁস পালনের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হয়েছেন। ‘পিকিং স্টার ১৩’ জাতের উন্নতমানের হাঁস পালন করে তিনি এখন সফলতার মুখ দেখছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এক সময় কামরুন নাহার মুরগি পালন করতেন। তবে মুরগির নানা রোগবালাই ও মৃত্যুর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েন তিনি। তখন এক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার পরামর্শে ‘পিকিং স্টার ১৩’ জাতের হাঁস পালন শুরু করেন। মাত্র ছয় মাস আগে এই জাতের হাঁস পালন শুরু করলেও এরই মধ্যে সুফল হাতে এসেছে তার। হাঁস পালনের পাশাপাশি তিনি ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরি করেও বাড়তি আয় করছেন।
উদ্যোক্তা কামরুন নাহার জানান, “এই জাতের হাঁস পালন খুবই সহজ। পানির প্রয়োজন হয় না, খাঁচায়ই সহজে পালন করা যায়। মাত্র ৪৫ দিনেই হাঁসের ওজন হয় ৩ থেকে ৪ কেজি। প্রতিটি হাঁস ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি করা যায়। কম খরচে বেশি লাভ—এ কারণেই আমি এই হাঁস পালন করছি।”
তিনি আরও জানান, বর্তমানে ফরিদপুর শহরের হোটেল থেকে শুরু করে আশপাশের জেলা পর্যন্ত তিনি হাঁস সরবরাহ করছেন। অচিরেই তিনি ৫০০ থেকে ১ হাজার হাঁস পালনের পরিকল্পনা করছেন।
স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার মোহন্ত জানান, প্রশিক্ষণ শেষে কামরুন নাহার শুরুতে ৫০টি হাঁসের বাচ্চা দিয়ে খামার শুরু করেন। হাঁসের দু’টি বাচ্চা মারা গেলেও বাকি ৪৮টি বিক্রি করে তিনি আয় করেন প্রায় ৪৮ হাজার টাকা। পরবর্তীতে তিনি আরও ২০০টি হাঁসের বাচ্চা নিয়ে বড় পরিসরে হাঁস পালন শুরু করেন। এখন তিনি আরও বড় খামার গড়ার উদ্যোগ নিচ্ছেন।
কামরুন নাহারের প্রতিবেশী খায়রুন সুলতানা বলেন, “আমাদের গ্রামেই কামরুন আপার খামার থেকে সহজে হাঁস কিনতে পারছি। ওনার সফলতা আমাদের উৎসাহিত করছে।”
এ বিষয়ে ফরিদপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সঞ্জীব কুমার বিশ্বাস বলেন, “কামরুন নাহারের ‘পিকিং স্টার ১৩’ জাতের হাঁস পালন একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। আমরা তাকে প্রযুক্তিগত পরামর্শ, ওষুধ ও বাজারজাতকরণে সব ধরনের সহযোগিতা করছি।”