
গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসে একটি সংঘবদ্ধ হামলায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ৫ সদস্য নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (৬ জুন) ইসরায়েলি গণমাধ্যমের বরাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা মেহের।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাজার প্রতিরোধ বাহিনী—বিশেষ করে হামাসের যোদ্ধারা—ইসরায়েলি সেনাদের একটি পরিকল্পিত ফাঁদে ফেলে দেয়। ফলে একপর্যায়ে তারা একটি ভবনে আটকা পড়ে, এবং সেটি ধসে পড়লে ঘটনাস্থলেই ৫ সেনা প্রাণ হারান। এ ঘটনায় আরও কয়েকজন আহত হওয়ার খবর জানিয়েছে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো।
ঈদুল আজহার দিনেও গাজার খান ইউনিসের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন এক শিশুসহ বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি। স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, উৎসবের দিনেও সেখানে গোলাবর্ষণ অব্যাহত রাখে ইসরায়েলি সেনারা।
অন্যদিকে, গাজার বিভিন্ন হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ঈদের আগের দিন চালানো একাধিক বিমান ও স্থল হামলায় কমপক্ষে ৭০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও ১৮৯ জন। হতাহতদের মধ্যে অনেক নারী ও শিশু রয়েছেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৫৪ হাজার ৬৭৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ২৫ হাজার ৫৩০ জনের বেশি। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
তবে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস বলছে, মৃতের প্রকৃত সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়িয়ে গেছে। তারা আরও জানায়, ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো হাজার হাজার মানুষ নিখোঁজ, যাদের জীবিত থাকার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
নিরবিচারে চলা এই হামলার ফলে গাজায় মানবিক সংকট ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সামগ্রীর ঘাটতি, আশ্রয়হীন মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি, ও শিশুখাদ্য সংকটসহ নানা বিপর্যয়ের মুখোমুখি সাধারণ মানুষ।
জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহল থেকে একাধিকবার যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হলেও তা উপেক্ষিতই থেকে যাচ্ছে।