
জাতীয় নিরাপত্তার উদ্বেগের কথা তুলে ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ১২টি দেশের নাগরিকদের ওপর পূর্ণাঙ্গ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। এর পাশাপাশি আরও ৭টি দেশের ওপর আংশিক নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়েছে বলে হোয়াইট হাউস সূত্রে জানা গেছে।
এই নিষেধাজ্ঞা অভিবাসী এবং অ-অভিবাসী—উভয় ধরনের ভিসাধারীদের জন্য প্রযোজ্য হলেও, কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম থাকছে। যেমন, বৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত স্থায়ী বাসিন্দা, পূর্বে ইস্যুকৃত বৈধ ভিসাধারী, নির্দিষ্ট ভিসা বিভাগভুক্ত ব্যক্তি এবং যুক্তরাষ্ট্রের ‘জাতীয় স্বার্থে’ গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত ব্যক্তিরা এই নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে থাকবেন।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, নিষেধাজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত ১৯টি দেশের মধ্যে ১০টিই আফ্রিকান দেশ। পূর্ণাঙ্গ নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে—আফগানিস্তান, মিয়ানমার, চাদ, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, নিরক্ষীয় গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান এবং ইয়েমেন। এই ১২টি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ সম্পূর্ণভাবে সীমিত কিংবা বন্ধ করা হয়েছে।
অন্যদিকে, আংশিক নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছে—রুন্ডি, কিউবা, লাওস, সিয়েরা লিওন, টোগো, তুর্কমেনিস্তান এবং ভেনেজুয়েলা। এ সব দেশের নাগরিকদের ওপর কিছু নির্দিষ্ট শর্তে ভ্রমণ সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে।
স্থানীয় সময় বুধবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই সংক্রান্ত একটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন। আগামী সোমবার থেকেই এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।
এক্স (পূর্বতন টুইটার)-এ দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, “সম্প্রতি কলোরাডোতে ইহুদি সম্প্রদায়ের একটি র্যালিতে পেট্রলবোমা নিক্ষেপের ঘটনার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” তিনি আরও দাবি করেন, ওই ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তি অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছিলেন।
ট্রাম্প বলেন, “আমার প্রেসিডেন্ট হিসেবে সবচেয়ে বড় দায়িত্ব হলো দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। যেসব দেশ পরিচয় যাচাই ও তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করতে ইচ্ছুক, তাদের সঙ্গে আমরা সম্পর্ক চালিয়ে যাব।”
তিনি আরও বলেন, কিছু দেশের নাগরিক ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করেন। এতে অভিবাসন ব্যবস্থা এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি হয়, যা সরাসরি জাতীয় নিরাপত্তার ঝুঁকি বাড়ায়।
উল্লেখ্য, ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদকালেও সাতটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন। যদিও ২০২১ সালে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ওই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেন।
সূত্র: বিবিসি