
ইসমাইল ইমন চট্টগ্রামঃ “ডিজাইনে বৈচিত্র্য না আনতে পারলে বাংলাদেশের পোশাক খাত পিছিয়ে পড়বে। আন্তর্জাতিক বাজারে টিকে থাকতে হলে আমাদের গার্মেন্টস শিল্পে আধুনিক ও সৃজনশীল ফ্যাশন ডিজাইনের বিকল্প নেই,”—বলেছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ডা. শাহাদাত হোসেন।
২৬ মে, সোমবার সকালে প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির ফ্যাশন ডিজাইন অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের নবীনবরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মেয়র বলেন, “বর্তমান বিশ্বে পোশাক খাত কেবল উৎপাদননির্ভর নয়, এটি নান্দনিকতা ও বৈচিত্র্যের উপরও নির্ভর করে। তোমাদের ডিজাইন হতে হবে আন্তর্জাতিক মানের—যা শুধু রপ্তানি বাড়াবে না, কর্মসংস্থানও সৃষ্টি করবে। এমন নতুনত্ব আনতে হবে, যা বিশ্ববাজারে আমাদের ব্র্যান্ড হিসেবে পরিচিত করবে।”
তিনি আরও বলেন, “৩০ বছর আগে আমি ভারতের বেঙ্গালুরুতে পড়তে গিয়ে এই বিভাগের গুরুত্ব ও সম্ভাবনা উপলব্ধি করি। আজ তোমরা বাংলাদেশেই এমন বিভাগে পড়ার সুযোগ পাচ্ছো—এটি সৌভাগ্যের। কিন্তু এখানেই থেমে থাকলে চলবে না, ভালোভাবে পড়াশোনা করে এমন ডিজাইন তৈরি করতে হবে যা দেশ-বিদেশে তাক লাগিয়ে দেবে।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক এস. এম. নছরুল কদির, কেডিএস গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর জনাব সেলিম রহমান, হালদা গ্রুপের চেয়ারম্যান সারওয়ার আলমগীর, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ ইফতেখার মনির, আমেরিকান কর্নার-চট্টগ্রামের কন্টাক্ট পার্সন সাদাত জামান খান, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্যানেল লয়ার মো. রেজাউল করিম রণি, বিজিএমইএ-র সাবেক ডিরেক্টর জনাব খন্দকার বেলায়েত হোসেন ও শ্রেয়া বুটিকের ফ্যাশন ডিজাইনার মনিদিপা দাশ। সভাপতিত্ব করেন বিভাগের চেয়ারম্যান সঞ্জয় কুমার দাশ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক এস. এম. নছরুল কদির বলেন, ফ্যাশন ডিজাইন হচ্ছে একটি আধুনিক শিল্পমাধ্যম। এই মাধ্যমে অনেক সম্ভাবনা ও সুযোগ রয়েছে। এটা এমন একটা মাধ্যম, যা কোলাবরেশন ছাড়া এগুতে পারে না। সেজন্য দেশের গার্মেন্টস শিল্পগোষ্ঠীগুলোর সহযোগিতা অপরিহার্য। তিনি উল্লেখ করেন, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির ফ্যাশন ডিজাইন এন্ড টেকনোলজি বিভাগ নতুন হলেও, এটা এমন একটা বিভাগ, যেটা গার্মেন্টস শিল্পজগতে আলোড়ন সৃষ্টি করতে পারে। তিনি আরও বলেন, এই বিভাগ এখনও শিশু বটে, কিন্তু একদিন অনেক বড় হবে। ফ্যাশন ডিজাইন ও মার্কেটের জগতে নেতৃত্ব দেবে।
তিনি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে এই বিভাগ, এই ইউনিভার্সিটি এগিয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
কেডিএস গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সেলিম রহমান বলেন, আমি ব্যবসায়ি হলেও একাডেমিয়া হলো আমার দুর্বলতা। তিনি মার্চেন্ডাইজিং, সেইলস ও মার্কেটিং সম্পর্কে বর্ণনা করে ফ্যাশন ডিজাইন এন্ড টেকনোলজির গুরুত্ব তুলে ধরেন।
হালদা গ্রুপের চেয়ারম্যান সারওয়ার আলমগীর ফ্যাশন ডিজাইনকে বিশাল একটি বিষয় বলে উল্লেখ করেন। তিনি বিভাগের শিক্ষার্থীদের ডিজাইন গার্মেন্টস জগতে ছড়িয়ে দেওয়ার কথা বলেন।
রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ ইফতেখার মনির বলেন, নতুন এই বিভাগ বড় পরিসরে এই প্রথম একটি প্রোগ্রাম করলো। ভবিষ্যতে নানা প্রোগ্রাম করার ক্ষেত্রে এই অভিজ্ঞতা বিভাগটির কাজে লাগবে। তিনি নবীন শিক্ষার্থীদেরকে কো-কারিকুলার ও এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিসের ক্ষেত্রে সর্বাত্মক সহযোগিতা ইউনিভার্সিটির পক্ষ থেকে অব্যাহত থাকবে বলে জানান।
আমেরিকান কর্নার-চট্টগ্রামের কন্টাক্ট পার্সন সাদাত জামান খান, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্যানেল লয়ার মো. রেজাউল করিম রণি ও বিজিএমইএ-র সাবেক ডিরেক্টর খন্দকার বেলায়েত হোসেনও বক্তব্য রাখেন। শিক্ষার্থী নুসরাত কবির ও ভবতোষ রুদ্রের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত ও সমাপনী বক্তব্য রাখেন বিভাগের চেয়ারম্যান সঞ্জয় কুমার দাশ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিভাগের সহকারী শিক্ষক-শিক্ষিকা, প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য এবং শিক্ষার্থীবৃন্দ। শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।