
মোঃ জামাল হোসেন (শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালক), ন্যাশনাল গার্লস মাদ্রাসা।
২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আগামী ৩০ জুন থেকে। পরীক্ষা যত ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপ ও উদ্বেগ। ভালো ফলাফলের জন্য বই পড়ে প্রস্তুতি নেওয়া যেমন জরুরি, তেমনি মানসিকভাবে দৃঢ় থাকা আরও বেশি প্রয়োজন। কারণ আত্মবিশ্বাস ও মানসিক স্থিরতাই পরীক্ষায় সাফল্যের অন্যতম চাবিকাঠি। তাই মানসিক ভাবে প্রস্তুতিটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
এখানে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য মানসিক প্রস্তুতির কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হলো আশা করি এতে অনেক উপকৃত হবে:
১. নিয়মিত রুটিন মেনে পড়াশোনা করতে হবে
একটি বাস্তবসম্মত রুটিন তৈরি করে পড়াশোনা করলে মনের মধ্যে স্থিরতা আসে। কোন বিষয়টি কখন পড়বে, কখন রিভিশন করবে এবং কখন বিশ্রাম নেবে—এসব পরিকল্পিত হলে মানসিক চাপ অনেকটাই কমে যায়।
২. নিজের উপর পূর্ণ বিশ্বাস রাখতে হবে
নিজের সামর্থ্য নিয়ে সন্দেহ নয়, বরং আত্মবিশ্বাস রাখ। মনে রাখবে, তুমি সারা বছর ধরে পড়াশোনা করেছো। এক-দু’টি ভুল বা ভুলে যাওয়া মানেই ব্যর্থতা নয়। ইতিবাচক চিন্তা তোমার মানসিক শক্তিকে বাড়িয়ে দিবে।
৩. পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম নিতে হবে
রাত জেগে পড়াশোনা না করে, বরং ৬-৮ ঘণ্টার পরিপূর্ণ ঘুমালে মন ও মস্তিষ্ককে সতেজ রাখতে পারবে। ঘুম ঠিক থাকলে মনোযোগ বাড়বে এবং পরীক্ষার সময় মাথা ঠান্ডা রাখা সহজ হবে।
৪. চাপ না নিয়ে আত্মতৃপ্তির সঙ্গে প্রস্তুতি নাও
নিজেকে সবসময় অন্যদের সঙ্গে তুলনা না করে নিজের অগ্রগতি দেখে খুশি হও। নিজেকে বোঝাতে হবে যে—”আমি চেষ্টা করছি, সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।”
৫. পরিবার ও শিক্ষকের সহযোগিতা নাও
মন খারাপ হলে পরিবারের সঙ্গে খোলামেলা কথা বল। শিক্ষক বা পরামর্শদাতার কাছ থেকেও মানসিক সহায়তা নেওয়া যেতে পারে। তারা তোমাকে শুধু পড়াশোনাতেই নয়, মানসিকভাবে দৃঢ় হতে সাহায্য করতে পারবে।
৬. সোশ্যাল মিডিয়া ও প্রযুক্তি থেকে দূরে থাকতে হবে
পরীক্ষার আগে ফেসবুক, টিকটক, ইউটিউব—এসব অ্যাপে সময় না কাটিয়ে বইয়ে মনোযোগ দিবে। প্রযুক্তির অতিরিক্ত ব্যবহার মস্তিষ্ককে ক্লান্ত ও বিভ্রান্ত করে তোলে। অতিরিক্ত সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার তোমার প্রস্তুতির ক্ষেত্রে বড় ক্ষতি করতে পারে।
৭. পরীক্ষার দিন মানসিকভাবে সম্পূর্ণ প্রস্তুত থাকো
পরীক্ষার দিন সকালে দেরি না করে সময়মতো কেন্দ্রে পৌঁছে যাবে। পরীক্ষার আগে খুব বেশি পড়ার চেষ্টা না করে মনকে শান্ত রাখবে। গভীর শ্বাস নিয়ে বিসমিল্লাহ্ বলে প্রথমে প্রশ্ন পুরোটা পড়ে তারপর উত্তর দেয়া শুরু করবে।
৮. ভুল হলে হতাশ হওয়া যাবে না
একটি পরীক্ষা খারাপ হলে পরেরটি ভালো করার সুযোগ থাকে। হতাশ না হয়ে পরবর্তী বিষয়ের ওপর পূর্ণ মনোযোগ দিতে হবে। একটা ভুলের কারণে নিরুৎসাহিত হওয়া যাবে না।
শেষ কথা বলতে চাই। শুধু মুখস্থ নয়, বুঝে পড়ে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে পরীক্ষা দিতে হবে। মনে রাখবে, এইচএসসি জীবনের একটি ধাপমাত্র, পুরো জীবন নয়। সঠিক মানসিক প্রস্তুতিই তোমাকে সফলতার দ্বারে পৌঁছে দিতে পারে।
শুভকামনা রইল সকল শিক্ষার্থীর জন্য।